Advertisement

Responsive Advertisement

ডাল ও পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতার পথে ত্রিপুরা: রতন লাল নাথ




আগরতলা, ১২ নভেম্বর: রাজ্যের কৃষি কলেজের বিজ্ঞানীরা ত্রিপুরার মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী অড়হর ডালের আটটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। এই নতুন জাতগুলি খুব শীঘ্রই রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে, যাতে ত্রিপুরা শিগগিরই ডাল উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে।
এই তথ্য আজ জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
মন্ত্রী আজ লেম্বুছড়া স্থিত কৃষি কলেজ পরিদর্শনের পর বলেন এই কলেজে আগে শুধু স্নাতক কোর্স চালু ছিল। ২০২১ সাল থেকে স্নাতকোত্তর (PG) কোর্সও চালু হয়েছে। বর্তমানে মোট ২০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। — এর মধ্যে স্নাতক স্তরে ১৭৫ জন এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ২৫ জন 
মন্ত্রী আরও জানান স্নাতক স্তরের সকল শিক্ষার্থীই ত্রিপুরার বাসিন্দা। ভর্তি প্রক্রিয়া রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে হয় এবং বাইরের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা স্নাতক স্তরে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এগ্রি বিএসসি করার প্রতি মেয়েদের আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
তিনি বলেন কৃষি ধ্বংস হলে সবকিছু ধ্বংস হবে। 
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ভারত আজ চাল, দুধ, ডিম, মাছসহ বিভিন্ন কৃষিজ উৎপাদনে স্বনির্ভর। একসময় ভারতকে চাল ও গম আমদানি করতে হতো, কিন্তু আজ আমরা সেগুলো বিদেশে রপ্তানি করছি। তবে ডাল উৎপাদনে এখনও আমরা পুরোপুরি স্বনির্ভর হতে পারিনি, কিছু ডাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ন্যাশনাল মিশন অন পালসেস কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য — ভারত যেন প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়।
মন্ত্রী জানান, কৃষি বিজ্ঞানী সহকারী অধ্যাপক বিজ্ঞানী মিস্টার পার্থ দাস এর নেতৃত্বে ড. বিমান দে (এগ্রোনোমিস্ট ), ড. ডি.পি. আওয়াস্থি (প্ল্যান্ট প্যাথোলজি) এবং ড. বি.সি. থাংজাম (এনটোমোলজি)- টিম দশ বছরের গবেষণায় এই আটটি অড়হর ডালের জাত উদ্ভাবিত করেছেন।
মন্ত্রী জানান ২০১৮ সালের আগে প্রতি হেক্টরে অড়হর ডালের গড় ফলন ছিল ৭০৫ কেজি। ২০১৮ সালের পরে তা বেড়ে হয়েছে ৮২৩ কেজি। এখন নতুন জাতগুলির বীজ চালু হলে ফলন প্রতি হেক্টরে প্রায় ২০০০ কেজি পর্যন্ত পৌঁছবে। গবেষণা দলের প্রতিবেদন জমা পড়েছে, খুব শীঘ্রই এই জাতগুলি কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই গবেষণা ২০০৯–২০১০ সালে আইসিএআর এবং ত্রিপুরা সরকারের সহায়তায় শুরু হয়েছিল। আগামী দিনে আমরা ডাল উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে বলে মন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী আরও জানান, আগে মনে করা হতো ত্রিপুরার মাটিতে পেঁয়াজ চাষ সম্ভব নয়, কিন্তু এখন রাজ্যে লাল ও সাদা দুই প্রজাতির পেঁয়াজই ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষকরা এখন পেঁয়াজ বীজের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। ২০১৭–১৮ সালে পেঁয়াজ চাষ হত ১৬৩ হেক্টর জমিতে, ২০২৫–২৬ সালের মধ্যে তা বেড়ে হয়েছে ২২৫ হেক্টর। এই বছর আমরা বিশেষভাবে এআরসি আলু ও পেঁয়াজ উৎপাদনে জোর দিচ্ছি। খুব শীঘ্রই রাজ্য এই ক্ষেত্রেও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ