আগরতলা, ১১ নভেম্বর: রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ও বাণিজ্যিক ফসলের সম্ভাবনা বাড়াতে দক্ষিণ জেলা ভিত্তিক একদিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো মঙ্গলবার। বীরচন্দ্রমনুর সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ভেজিটেবলের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এই কর্মশালার মূল বিষয় ছিল পাম তেল চাষ ও এআরসি প্রযুক্তিতে আলু চাষ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যিক উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ড. রাজীব ঘোষ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের দক্ষিণ জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর সুমিত কুমার সাহা, এবং কৃষি, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরা।
এদিন দক্ষিণ জেলা থেকে ৮ জন কৃষি তত্ত্বাবধায়ক ও ১৯ জন এগ্রি সেক্টর অফিসার, এবং গোমতি জেলা থেকে ৭ জন কৃষি তত্ত্বাবধায়ক ও ১৭ জন এগ্রি সেক্টর অফিসার কর্মশালায় অংশ নেন।
কর্মশালায় আলোচনায় উঠে আসে কী ভাবে রাজ্যের আরও বেশি চাষিকে পাম তেল চাষ এবং এআরসি প্রযুক্তিতে আলু উৎপাদনের আওতায় আনা যায়। বর্তমানে রাজ্যে মোট ৭,৬২২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়ে থাকে, যেখানে ১,৪৬,০৪৯ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ১৯.১৬ মেট্রিক টন। রাজ্যে মোট ২৩,৭৪৬ জন আলু চাষী রয়েছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ জেলায় ২,০৩৩ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়ে থাকে, যেখানে ৩৭,৫৩৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়।
এআরসি প্রযুক্তিতে আলু চাষের পরিকল্পনা
কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এআরসি পদ্ধতিতে চাষ করলে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং খরচও অনেক কমবে। এই প্রযুক্তিতে মাটির পরিবর্তে বায়ুসঞ্চালিত মাধ্যমে গাছের মূলের বৃদ্ধি সম্ভব হয়, ফলে সেচ ও সার ব্যবহারে সাশ্রয় ঘটে। আগামী মৌসুমে দক্ষিণ ও গোমতি জেলার নির্বাচিত এলাকায় পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে এআরসি প্রযুক্তি প্রয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্যে পাম তেল চাষ সম্প্রসারণের ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, উপযুক্ত জলবায়ু ও মাটির কারণে ত্রিপুরার দক্ষিণ ও গোমতি জেলা পাম তেল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত। আগামী অর্থবছরে প্রায় ৫০০ হেক্টর নতুন জমিতে পাম তেল চাষ শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, চারা সরবরাহ এবং বিপণন সহযোগিতার জন্য বিশেষ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ