Advertisement

Responsive Advertisement

৩১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী নিরাময় আরোগ্য অভিযানের সূচনা




 
আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর: ত্রিপুরা সরকার রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবায় এক গুরুত্বপূর্ণ ও জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ হিসেবে “মুখ্যমন্ত্রী নিরাময় আরোগ্য অভিযান” চালু করতে চলেছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি ও নেতৃত্বে এই অভিযান আগামী ৩১ ডিসেম্বর বেলা ১ টায় প্রজ্ঞা ভবনের ১নম্বর হলে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হবে। উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা মানুষের মধ্যে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব রোগ দীর্ঘদিন ধরা পড়ে না এবং পরবর্তীতে মারাত্মক আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার একটি প্রতিরোধমূলক ও জনমুখী উদ্যোগ হিসেবে এই অভিযান শুরু করতে চলেছে ।
বার্ষিক দুই ধাপে প্রথমে : ১–১৪ জানুয়ারি ২০২৬ ও পরবর্তীতে ১–১৪ জুলাই ২০২৬ - এই অভিযান সংগঠিত করা হবে। ১৪ দিনের প্রথম ৭ দিন তৃণমূলস্তরে কাজকর্ম, জনসচেতনতা, কমিউনিটিতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে এবং পরবর্তী ৭ দিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা, স্ক্রিনিং ক্যাম্প, রোগ চিহ্নিত করা ও ফলো-আপ করা হবে। প্রত্যেক ধাপে ৩.৫ লক্ষ মানুষকে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের জন্য পরীক্ষা করা হবে। বছরে ৫ লক্ষ মানুষের ওরাল ক্যান্সারের জন্য, ২.৫ লক্ষ মহিলাকে স্তন ও সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের জন্য এছাড়া ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, নন-অ্যালকোহল ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, সিওপিডি, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক সহ অন্যান্য রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে। যক্ষ্মা রোগ শনাক্তকরণের জন্য কাশি, জ্বর, রাতে ঘাম ও ওজন কমার মতো উপসর্গ চিহ্নিত করে কফ সংগ্রহ ও পরীক্ষার ব্যবস্থাও এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই অভিযানের আওতায় আশা কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্ক্রিনিং, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবেন। রাজ্য সরকার এই অভিযানের মাধ্যমে সামাজিক অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চলেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সমাবেশের মাধ্যমে জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। 
আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই অভিযান বাস্তবায়িত হবে, যেখানে অ্যালোপ্যাথি, ডেন্টাল ও আয়ুষ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে রক্তচাপ, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও হৃদরোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি নিরূপণসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি যাদের এখনও ABHA আইডি নেই, তাদের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিচয় তৈরির ব্যবস্থাও করা হবে।
রোগীদের ধারাবাহিক চিকিৎসা ও ফলো-আপ নিশ্চিত করতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রদান, ই-সঞ্জীবনী টেলি-মেডিসিন পরিষেবা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হবে। 
সার্বিকভাবে, মুখ্যমন্ত্রী নিরাময় আরোগ্য অভিযান একটি সুস্থ, সচেতন ও কল্যাণমুখী ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের একটি সুদৃঢ় ও দূরদর্শী উদ্যোগ। জনস্বার্থে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের এই ইতিবাচক, সংবেদনশীল ও জনমুখী পদক্ষেপ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ