Advertisement

Responsive Advertisement

হিন্দুদের জীবন ও ধর্মীয় ঐতিহ্য সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ জরুরি: মন্ত্রী রতন লাল নাথ



আগরতলা, ২৩ ডিসেম্বর: ত্রিপুরার বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান সহিংসতা, নির্যাতন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আক্রমণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন আমরা বাংলাদেশে হিন্দুদের গণহত্যা এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান পরিকল্পিত সহিংসতা এবং নৃশংস অত্যাচারের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের সাম্প্রতিক নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে যে সেখানে বসবাসরত হিন্দুদের জীবন সম্পূর্ণ অনিরাপদ। এটি কেবল সহিংসতা নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টা।
মন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়টির প্রতি অবিলম্বে কার্যকর সাড়া দেওয়া প্রয়োজন। 
একই সঙ্গে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই নিন্দনীয় ঘটনাগুলির প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ অত্যন্ত জরুরি।
রতন লাল নাথ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের বিশ্বাসের কেন্দ্রগুলি ধারাবাহিকভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং উগ্র জনতা পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় পরিচয়কে লক্ষ্য করে সহিংসতা চালাচ্ছে।
তিনি বিশেষভাবে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশিষ্ট ও পবিত্র ঢাকেশ্বরী মন্দিরের উপর আক্রমণ এবং এর জমি দখলের প্রচেষ্টা হিন্দুদের অস্তিত্বের উপর সরাসরি আক্রমণ। যশোরেশ্বরী কালী মন্দির (সাতক্ষীরা) যা ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম এই ঐতিহাসিক মন্দির থেকে মা কালীর মুকুট চুরি হিন্দু বিশ্বাসের প্রতি চরম অবমাননা, ইসকনের মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সেবা ও ভক্তির কেন্দ্রগুলি ধ্বংস করা হচ্ছে। 
মন্ত্রী আরও বলেন, এই আক্রমণ শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকেও ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে—যা ভারত ও বাংলাদেশকে ঐতিহাসিকভাবে আবদ্ধ করে রেখেছে।
তিনি উল্লেখ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক নিবাস (কাছারি বাড়ি) শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরুর ঐতিহাসিক ভবন ভেঙে ফেলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি অবমাননা, রাহুল আনন্দের বাড়ি এবং তার অমূল্য বাদ্যযন্ত্র পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া সংস্কৃতির উপর ভয়াবহ আঘাত।
শেষে রতন লাল নাথ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসবাসকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন বা পার্সি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সমাজের নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে, সর্বসম্মতভাবে এই ঘটনাগুলির নিন্দা জানাতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ও বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ