আগরতলা, ৮ নভেম্বর : রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মানোন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহার উদ্যোগে বদলে যাচ্ছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির চিত্র। সেই পরিবর্তনের অন্যতম দৃষ্টান্ত আজ বিশালগড় হাসপাতাল। এক সময় যেখানে অব্যবস্থাপনা, ভিড় ও হতাশা ছিল প্রতিদিনের দৃশ্য, সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে শৃঙ্খলা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও মানবিক সেবা।
হাসপাতালের দরজায় পা রাখলেই বোঝা যায় পরিবর্তনের ছোঁয়া। রোগীদের সারিতে আর হাহাকার নেই, আছে ধৈর্য ও আস্থা। চিকিৎসকরা নিয়মিত রোগীদের সঙ্গে কথা বলছেন, খোঁজ নিচ্ছেন তাদের শারীরিক অবস্থার। নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও সমান যত্নে সেবা দিচ্ছেন। প্রশাসনিক কর্মীদেরও আচরণে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন — যেন হাসপাতাল নয়, এক মানবিক আশ্রয়কেন্দ্র।
রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, এখন শুধু চিকিৎসা নয়, প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ ওষুধ ও সামগ্রীও হাসপাতাল থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বাইরে থেকে ওষুধ কেনার চাপ কমেছে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য এটি এক বড় স্বস্তি। কেউ কেউ বলছেন, এত বছর পর সরকারি হাসপাতালে এসে সত্যিকারের সেবা পাওয়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছে তাদের।
একজন প্রবীণ রোগীর কথায়, আগে চিকিৎসার জন্য যেতে হতো দূরে আগরতলা বা বেসরকারি ক্লিনিকে। এখন বিশালগড় হাসপাতালেই সব সুবিধা মিলছে। আবার কেউ কেউ জানালেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য সময়মতো খাবার, পরিষ্কার বিছানা, এবং পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরাও এই পরিবর্তনে উৎসাহী। মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান ও নজরদারিতে তাদের কাজের পরিবেশ যেমন উন্নত হয়েছে, তেমনি মানুষের আস্থা ফিরে আসায় কাজের আনন্দও বেড়েছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানালেন, তারা এখন শুধু চিকিৎসক নন, বরং মানুষের সেবক হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব অনুভব করছেন।
বিশালগড়ের মানুষ এখন হাসপাতালের নাম উচ্চারণেই গর্ব বোধ করেন। তারা মনে করেন, এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে— যথাযথ পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা থাকলে সরকারি ব্যবস্থাতেও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব। রোগী ও তাদের পরিবার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাদের বিশ্বাস, এই মানবিক উদ্যোগের ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও সুসংহত ও জনমুখী হয়ে উঠবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাসপাতালগুলির সার্বিক মানোন্নয়নের কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। বিশালগড় হাসপাতাল এখন সেই প্রচেষ্টার সফল প্রতীক— যেখানে চিকিৎসা শুধু পেশা নয়, এক সেবার প্রতিশ্রুতি।
0 মন্তব্যসমূহ