Advertisement

Responsive Advertisement

ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ছিলেন প্রখর রাজনীতিবিদ ও জননায়ক: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৬ জুলাই: ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ছিলেন প্রখর রাজনীতিবিদ, স্বাধীনচেতা, দার্শনিক ও জননায়ক। দেশভাগের বিরোধীতায় সর্বাগ্রে থাকা রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। শনিবার ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
                          অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির উপর আয়োজিত ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১২টি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী নিজেও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে ওপেন ক্যুইজের সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবনদর্শন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ১২টি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে মহিলা মহাবিদ্যালয়, শচীন দেববর্মণ স্মৃতি সরকারি সংগীত মহাবিদ্যালয় ও পুরাতন আগরতলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, বর্তমান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দীনদয়াল উপাধ্যায়, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মতো দেশের বরেণ্যে সন্তানদের মার্গদর্শনে কাজ করছে। নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বচ্ছতা বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক বিকাশে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই এখন সারা দেশে সাড়ম্বরে ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়। বিগত সরকারের আমলে বিশেষ উদ্দেশ্যে বর্তমান প্রজন্মকে এই ধরণের দেশপ্রেমিক মনীষীর জীবনদর্শন জানা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে যেসকল সমস্যা রয়েছে তা সবকিছুই দেশভাগের ফলেই সৃষ্টি হয়েছে। দেশভাগের বিরোধিতা করেছিলেন ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি।
                              মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সেই সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করা হতো। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করতে গিয়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতে প্রথম ত্রিপুরা রাজ্যেই পঞ্চায়েতস্তর পর্যন্ত ই-অফিস চালু করা সক্ষম হয়েছে। যা একটি গর্বের বিষয়। রাজ্যের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার মান উন্নয়নে সরকারের নিরন্তর প্রয়াস জারি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা ইতিমধ্যে রাজ্যে চালু হয়েছে। যার সুযোগ সুবিধাভোগীরা রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল এবং ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে পাচ্ছেন। সম্প্রতি আইএলএস হাসপাতালকেও এই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বহিরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালকেও মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সূচিতে যুক্ত করা হবে। রাজ্যে একটি এইমস স্থাপনের জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
                            অনুষ্ঠানে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবন, দেশপ্রেম এবং রাজনীতির বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক তথা টিআইটি'র সহযোগী অধ্যাপক ড. জয়ন্ত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যের ২৩টি মহকুমাতেই আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মজয়ন্তী আলোচনাচক্র, ক্যুইজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ