Advertisement

Responsive Advertisement

মহারাজা বীরবিক্রম মহাবিদ্যালয়ের সুনাম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

 

আগরতলা, ০৪ ডিসেম্বর: রাজ্যের গর্ব মহারাজা বীরবিক্রম মহাবিদ্যালয়ের (এমবিবি) সুনাম শুধু রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও ছড়িয়ে রয়েছে। এই মহাবিদ্যালয়ের পরিবেশ দেশের যেকোনও কলেজের পরিবেশের তুলনায় কোনো অংশে কম নয়। এমবিবি মহাবিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করে রাজ্যের বহু কৃতি সন্তান আজ দেশ বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে মহারাজা বীরবিক্রম কলেজের নবাগত ছাত্রছাত্রীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। নবীন বরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের এম বি বি মহাবিদ্যালয়ের এই ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীরাই হচ্ছে দেশ বা রাজ্যের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের উপরই ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত' বা 'এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা' গঠন নির্ভর করছে। তাই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে একটা মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। তবেই পবিত্র ভাবনা চিন্তা নিয়ে পড়াশুনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়শই বলেন থাকেন যে, যাদের কাছে জ্ঞান থাকবে পৃথিবী তাদেরই হাতের মুঠোয় থাকবে। এই জ্ঞান লাভের অন্যতম স্থান হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবোধের বিষয়েও শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গক্রমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে রাজ্যের মহাবিদ্যালয় গুলোতে সব সময় একটা আতঙ্কের পরিবেশ দেখা যেতো। বর্তমানে এই অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে ২৩৪ একর জায়গা নিয়ে বিদ্যাপত্তন নামে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য এই কলেজ স্থাপন করেন। মহারাজার চিন্তাভাবনা ছিল রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে কারিগরী, সংগীত, মেডিকেল ইত্যাদি মহাবিদ্যালয় স্থাপন করা। মহারাজার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য বর্তমান রাজ্য সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। বর্তমানে রাজো ২টি মেডিকেল কলেজ, আইন কলেজ, ন্যাশনাল ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ সহ বহু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ফলে বর্তমান সময়ে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা রাজ্য থেকেই উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মহাবিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেও সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ফলে ঐতিহ্যবাহী এই মহারাজা বীরবিক্রম কলেজও বর্তমানে নতুন কলেবরে সেজে উঠছে। মহারাজা বীরবিক্রম কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। শিক্ষা দপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় একটি হেরিটেজ বিল্ডিংসহ মোট চারটি পাকা বিল্ডিং নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কলেজের পুরনো রাস্তা সংস্কার, গেইট নির্মাণ ও পুরনো বিজ্ঞান ভবনের সংস্কার বাবদ ৬০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে বর্তমান সরকার। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক তথ্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তবো তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, নবীন বরণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি চিরাচরিত অনুষ্ঠান। বর্তমান রাজ্য সরকারের সময়কালে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের উপর গুরুত্ব
দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামো উন্নয়নেও সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ
করে কাজ করছে। ফলে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা রাজ্যেই উচ্চশিক্ষা লাভ করার সুযোগ পাচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য্য, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, এমবিবি কলেজের অধ্যক্ষ ড. নির্মল ভদ্র ও এমবিবি কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক ড. আইভি চৌধুরী। অনুষ্ঠানে এমবিবি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ