দিল্লি, ১০নভেম্বর : ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লাল কিলা এলাকার সামনে সোমবার সন্ধ্যায় একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণটি ঘটে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা প্রায় ৬টা ৫৫ মিনিটে লাল কিলা মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর–১-এর সামনে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলেই অন্তত আটজন নিহত এবং উনিশজনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ (LNJP) ও রাম মনোহর লোহিয়া (RML) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণটি একটি i20 মডেলের গাড়িতে ঘটেছে, যার রেজিস্ট্রেশন হরিয়ানা রাজ্যের। গাড়িটি সিগন্যালে থামার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে আগুনে পুড়ে যায় এবং আশপাশে থাকা আরও কয়েকটি গাড়ি ও অটো-রিকশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দমকল বিভাগের সাতটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের কারণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হামলা, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক দল প্রমাণ সংগ্রহ করছে, পাশাপাশি আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। গাড়িটির পূর্ব মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিস্ফোরণের পরপরই দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লি পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন।
দিল্লি পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরা জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে আমরা সমস্ত দিক বিবেচনা করছি—দুর্ঘটনাজনিত, প্রযুক্তিগত ত্রুটি অথবা সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাবে না।”
এলাকা আপাতত সাধারণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই রুটে ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত লাল কিলা মেট্রো স্টেশন এবং আশপাশের অঞ্চল পুলিশ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (NIA) ও দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল যৌথভাবে তদন্তে যুক্ত হয়েছে। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান ও সম্ভাব্য বিস্ফোরক দ্রব্যের বিশ্লেষণ চলছে।
এই ঘটনার ফলে রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি কঠোর করা হয়েছে। সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বড় শহরগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
(তথ্যসূত্র: AP News, Reuters, The Guardian, Business Today, Navbharat Times, Mehr News)
0 মন্তব্যসমূহ