Advertisement

Responsive Advertisement

রাজ্যে শুরু হয়েছে ১০০ দিনের বিশেষ ক্যান্সার স্ক্রিনিং অভিযান


আগরতলা, ৩ সেপ্টেম্বর: বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার রোগের ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে বিশেষ তৎপরতা শুরু করেছে ভারত সরকার। প্রাথমিক সনাক্তকরণে জোর জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আজকের দিনে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে অসংক্রামক রোগ । এই রোগগুলো সাধারণত এক ব্যক্তি থেকে আরেক জনের মধ্যে ছড়ায় না, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে প্রভাব ফেলে এবং ধীরে ধীরে জটিলতা সৃষ্টি করে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হাঁপানি ও উচ্চ রক্তচাপ হলো এমন কিছু সাধারণ অসংক্রামক রোগ, যেগুলি বহু মানুষকে আক্রান্ত করছে।
এই অসংক্রামক রোগগুলির মধ্যে ক্যান্সার এখন ভারতের জন্য এক গুরুতর চ্যালেঞ্জ — যার প্রভাব শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, সকল বয়সের মানুষের মধ্যেই দ্রুত হারে বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে রাজ্যজুড়ে ১০০ দিনের বিশেষ ক্যান্সার স্ক্রিনিং অভিযান শুরু করেছে, যার মূল লক্ষ্য হলো রাজ্যের প্রতিটি নাগরিককে ক্যান্সার স্ক্রিনিং-এর আওতায় এনে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণ নিশ্চিত করা।
এই বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে মূলত জরায়ু, স্তন এবং মুখগহ্বরের ক্যান্সার সনাক্তকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই তিন ধরনের ক্যান্সার ভারতের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী ও পুরুষকে প্রভাবিত করে। 
এই উদ্দেশ্যে , ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আগরতলার প্রজ্ঞা ভবন-এ অনুষ্ঠিত হয় এক বিশেষ "Training of Trainers (ToT)" প্রোগ্রাম। এতে অংশগ্রহণ করেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরাকে সহযোগী হিসেবে কাজ করা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা জে এইচ পি আই ই জি ও (Jhpiego) -এর প্রতিনিধি ও প্রশিক্ষকবৃন্দ। এই অভিযানে স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এর আওতায় চিকিৎসক, নার্সিং অফিসার, কমিউনিটি হেলথ অফিসার, এএনএম এবং আশা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য — একটি দক্ষ মাস্টার ট্রেনার দল গঠন করা, যারা রাজ্যের বিভিন্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্যপরিসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন এবং জেলার স্তরে আশা কর্মীদেরও ক্যান্সার স্ক্রিনিং সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী আঞ্চলিক ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ শিরোমণি দেববর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগপ্রতিরোধক অধিকারের যুগ্ম পরিচালক ডাঃ নির্মল সরকার, জাতীয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রক্লপ’ র স্টেট প্রোগ্রাম অফিসার ডাঃ অভিজিৎ দাস, জে এইচ পি আই ই জি ও’র তরফ থেকে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছেন ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ অসুতোষ পাধি, ডাঃ অনুপমা রাও এবং ডাঃ স্বগতিকা সেনাপতি প্রমুখ।   
এই ১০০ দিনের অভিযানের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, জেলায় জেলায় আশা কর্মীদের প্রস্তুত করা হবে — যাতে ভবিষ্যতে ত্রিপুরা রাজ্যে একটি শক্তিশালী ক্যান্সার স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ