Advertisement

Responsive Advertisement

খ্যাতি বনাম সম্পর্ক: স্বামীর অবদানে উত্থান, খ্যাতির শীর্ষে এসে বিচ্ছেদ





পৃথিবীর ইতিহাসে বহু খ্যাতিমান নারী রয়েছেন, যাঁদের জীবনের শুরুটা অনেকটা স্বামী-নির্ভর ছিল। তাঁদের স্বামীর সহায়তা, দিকনির্দেশনা কিংবা আর্থিক ও মানসিক শক্তি তাঁদের সাফল্যের পথে বিশাল ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু সাফল্যের চূড়ায় ওঠার পর অনেকেই স্বামীদের ছেড়ে নিজেদের আলাদা পৃথিবী তৈরি করেছেন। সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, খ্যাতি ও স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনেও নতুন সংঘাত তৈরি হয়—ফলে বিবাহ টিকিয়ে রাখা অনেক সময় সম্ভব হয় না।

মেরিলিন মনরো (Marilyn Monroe)
হলিউডের সবচেয়ে আলোচিত নারী মেরিলিন মনরো ছোটবেলায় দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করেছেন। তাঁর প্রথম স্বামী জেমস ডোয়ার্টি তাঁকে মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দিয়েছিলেন। তবে খ্যাতি আসার পর তিনি চলচ্চিত্রে এতটাই ডুবে যান যে সংসার ভেঙে যায়। মনরো একসময় বলেছিলেন, “আমি স্ত্রী হওয়ার চেয়ে তারকা হতে চাই।”

মাদোনা (Madonna)
পপ রানি মাদোনার সাফল্যের পেছনে পরিচালক স্বামী গাই রিচির অনেক প্রভাব ছিল। ক্যারিয়ারের বড় অংশে রিচি তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, শিল্পীসত্তা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন। কিন্তু খ্যাতি ও স্বাধীনতার পথে এগোতে গিয়ে এই দম্পতির সম্পর্ক টেকে না। বিচ্ছেদের পরও মাদোনা নিজের সাম্রাজ্য আরও প্রসারিত করেন।

এলিজাবেথ টেইলর (Elizabeth Taylor)
হলিউডের কিংবদন্তি নায়িকা এলিজাবেথ টেইলরের ব্যক্তিগত জীবন ছিল ঝড়ো। তাঁর একাধিক স্বামী তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও খ্যাতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই সম্পর্ক ভেঙেছেন। স্বামীদের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও নিজের ক্যারিয়ার ও খ্যাতিকে তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।


 জে. কে. রাউলিং (J.K. Rowling)
“হ্যারি পটার”-এর স্রষ্টা রাউলিংয়ের জীবনের শুরুটা ছিল সংগ্রামের। প্রথম স্বামী জর্জ আরান্তেস তাঁকে মানসিকভাবে অনেকটা সময় পাশে ছিলেন, তবে পরবর্তীতে তিনি খ্যাতি অর্জন করার পর সম্পর্ক ভেঙে যায়। রাউলিং নতুন জীবনে উঠে দাঁড়িয়ে বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম ধনী ও খ্যাতিমান নারী হয়ে ওঠেন।

পৃথিবীর বহু খ্যাতিমান নারীর সাফল্যের গল্পের পেছনে রয়েছে তাঁদের স্বামীদের নীরব অবদান। কিন্তু খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছানোর পর সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সবসময় সম্ভব হয়নি। বিশ্বজুড়েই যেমন, বাংলাদেশ ও ভারতীয় সমাজেও এমন উদাহরণ রয়েছে।

ইন্দিরা গান্ধী
ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে স্বামী ফিরোজ গান্ধীর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভিন্নতা তাঁদের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধী একাই তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে গড়ে তোলেন।

করিশ্মা কাপুর
বলিউড তারকা করিশ্মা কাপুরের ক্যারিয়ার উত্থানের সময় ব্যবসায়ী স্বামী সঞ্জয় কাপুর তাঁকে সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু খ্যাতি ও লাইমলাইটের চাপে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। করিশ্মা পরে একক মাতৃত্ব বেছে নেন।

কঙ্গনা রানাওয়াত (আলোচিত উদাহরণ)
যদিও আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়নি, তবে কঙ্গনার ক্যারিয়ারের শুরুতে কিছু পুরুষ প্রযোজক ও সঙ্গী তাঁকে ভীষণভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। পরে খ্যাতি আসতেই সম্পর্ক ভেঙে যায় এবং কঙ্গনা সম্পূর্ণ এককভাবে নিজের জায়গা করে নেন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
শাবানা
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি শাবানার ক্যারিয়ারের শুরুতে স্বামী ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিকের অবদান ছিল। তিনি শাবানাকে প্রযোজনা ও ব্যবস্থাপনায় পাশে থেকে সহায়তা করেছিলেন। যদিও তাঁদের সম্পর্ক আজও টিকে আছে, কিন্তু খ্যাতির চাপে সংসার-জীবনে বহু উত্থান-পতনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

শাবনূর
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের সাফল্যের পিছনে স্বামী নয়, বরং প্রথম জীবনের কিছু ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভূমিকা রেখেছিল। তবে খ্যাতি আসার পর ব্যক্তিগত জীবনে টানাপোড়েন তাঁকে সংসার থেকে দূরে নিয়ে যায়।

রুনা লায়লা
বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রথম স্বামী রনি (সঙ্গীত পরিচালক) পাশে ছিলেন। তবে খ্যাতি ও ব্যস্ততার কারণে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। রুনা লায়লা পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং ক্যারিয়ার চালিয়ে যান।

( এই তথ্যগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ