Advertisement

Responsive Advertisement

২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজারের অধিক চাকরি প্রদান করেছে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্য ও কেন্দ্রের ডাবল ইঞ্জিন সরকার মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে
২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজারের অধিক চাকরি প্রদান করেছে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী
আগরতলা, ১০ জুলাই: রাজ্য ও কেন্দ্রের ডাবল ইঞ্জিন সরকার মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজারের অধিক চাকরি প্রদান করেছে এই সরকার। এরমধ্যে চুক্তিবদ্ধ ও আউটসোর্সিং বাদে এই বিশাল সংখ্যার সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে। চাকরির পাশাপাশি অন্যান্য কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। 
                                 বুধবার আইজিএম হাসপাতাল সংলগ্ন নবনির্মিত হরিজন কোয়ার্টারের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
                                অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোন কথা বলতে হলে আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা বলতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ ও চিন্তাভাবনাকে সামনে রেখে ত্রিপুরা সরকারও কাজ করছে। এতদিন ধরে যারা বঞ্চিত, সত্যিকার অর্থে যাদের মূল্যায়ন করা হয় নি তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক মূল্যায়ন যদি কেউ করে থাকেন তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদি। ত্রিপুরা সরকারও সেই দিশায় কাজ করছে। এখানে সাফাই কর্মীদের জন্য একটা সুদৃশ্য ও সুন্দর বিল্ডিং গড়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বসুবিধা যুক্ত ভবন করা হয়েছে এটি। যে আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করছি সেই ভাবনা থেকেই সাফাই কর্মীদের জন্য এমন সুন্দর আবাসন গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়নের কাজ করছি আমরা। এধরণের প্রকল্প আগামীদিনেও করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই সুদৃশ্য আবাসন তৈরির জন্য ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় আড়াই বছর সময় লেগেছে। দ্বিতল বিশিষ্ট এই আবাসনে মোট ১০টি আবাস রয়েছে। এরমধ্যে আজই ৯ জন সুবিধাভোগীর হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে। সম্মানের সঙ্গে যাতে সবাই এখানে থাকতে পারেন সেই ব্যবস্থা করেছে সরকার। আর এই ভবন তৈরি করতে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে এক পয়সাও নেওয়া হয় নি। 
                                 মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এতদিন ধরে আমরা দেখতাম গরীবি হঠাও, গরীবি হঠাও - এধরণের অনেক শ্লোগান। গরীবদের জন্য মায়াকান্নাও আমরা দেখেছি। কিন্তু এখন সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিশেষ করে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও সরকার পরিবর্তনের পর সবাই দেখছেন যে এখন বড় বড় মিছিল, শোভাযাত্রা করতে হয় না। কিছু পাওয়ার জন্য জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ করতে হয় না। এমনিতেই আমরা দিয়ে দিচ্ছি। সরকারি কর্মচারীদের ডিএ থেকে শুরু করে অনেক কিছু দেওয়া হচ্ছে। আগে সবসময় বিকেল বেলায় মিছিল করতে হতো। এখন এই সংস্কৃতিই পাল্টে গেছে। আমরা বলছি কাজের কোন বিকল্প নেই। কাজের মাধ্যমেই যে কারোর মূল্যায়ন হয়। রক্তের যেমন কোন ধর্ম হয় না, কাজেরও কোন ধর্ম হয় না। কর্মচারীদেরও নিজেদের দায়দায়িত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন হতে হবে। যে কাজই দেওয়া হয় সেটা যাতে সময়ের মধ্যে করা হয়। আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে এই সরকার স্বচ্ছতার সরকার। যদিও অনেকে অনেক কিছু বলে থাকে। কিন্তু লাভ হবে না। কারণ স্বচ্ছতার মাধ্যমেই আমরা সব কাজ করছি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে শুরু করে খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এই সরকার। আমরা আগে দেখতাম ১৫ বছর মিছিলে হাঁটিয়ে চাকরি দেওয়া হয়। আর সেটাও দেওয়া হলো অন্যায়ভাবে। তাই ওদের দেখে কষ্ট হয়। আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে তাদের সাহায্য করা যায়। এখন বিভিন্ন চাকরিতে তাদের মধ্যে অনেকে স্বচ্ছতার সঙ্গে যোগদান করছেন। 
                        মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্টার্ট আপ ও এন্টারপ্রেনারশিপের মাধ্যমে অনেকেই ভালো রোজগার করে এখন ভালো জায়গায় রয়েছেন। স্ব সহায়ক দলের মাধ্যমে গ্রামীণ আর্থিক ব্যবস্থারও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে মাত্র ৪/৫ হাজার ছিল স্ব সহায়ক দল। সেই জায়গায় এখন প্রায় ৪৬ হাজার হয়েছে। মহিলাদের আর্থিক উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। 
                            অনুষ্ঠানে তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী অনুসূচিত জাতি অভ্যুদয় যোজনা (পিএম অজয়) এর মধ্যে ২০২৩ - ২৪ অর্থবর্ষে ২১৫টি প্রকল্প এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ২,৪৮০ জন সুবিধাভোগী আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ২০২৩ - ২৪ অর্থবর্ষে ১,৯২০ জনের রোজগার সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হয়েছে। বাবু জগজীবন রাম ছাত্রাবাস যোজনায় ২০২৩ - ২৪ অর্থবর্ষে তিনটি হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুটি কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে হয়ে যাবে। রাজ্য সরকারের প্রকল্পে ২০২৩ - ২৪ অর্থবর্ষে ৭,৮২৭ জন ছাত্রছাত্রীকে ড. বি আর আম্বেদকর মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা প্রথম থেকে দশম স্থান পেয়েছে এবং ৯ জন তপশিলি জাতি ছাত্রছাত্রীকে গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৮৭২ জন ছাত্রছাত্রীকে বোর্ডিং হাউজ স্টাইপেন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া গত বছর ৬৫০ জন সুবিধাভোগীকে মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় বিভিন্নভাবে সাহায্য করা হয়েছে। তপশিলি জাতিভুক্ত ১৫৩ জন সুবিধাভোগীকে মোট ৪ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। 
                              অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, পশ্চিম জেলাশাসক ড. বিশাল কুমার সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ