আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর: মহিলাদের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে বর্তমান রাজ্য সরকার কাজ করছে। দেশের মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক অন্যতম সংকল্প। প্রধানমন্ত্রীর সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতে রাজ্য সরকারও উদ্যোগ নিয়েছে। আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে ১৮তম আঞ্চলিক সরস মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংকল্প বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মহিলাদের নিয়ে স্বসহায়ক দল গঠনের মধ্য দিয়ে লাখপতি দিদি বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ৫১ হাজার ৩৬৪টি স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। এই স্বসহায়ক দলগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মোট ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৬৬ জন মহিলা। এবারের সরস মেলার ভাবনা হলো ‘লাখপতি দিদি ত্রিপুরার অগ্রগতি'। এই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ‘লাখপতি দিদি” বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের মলাট উন্মোচন করেন। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশন আয়োজিত এবারের মেলায় মোট ৩৭৭টি স্টল খোলা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৪৬টিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্বসহায়ক দলের সদস্যরা তাদের উৎপাদিত সামগ্রীর পসরা নিয়ে বসেছেন। এছাড়াও ৬টি স্টল দেশের অন্যান্য রাজ্যের স্বসহায়ক দলের পক্ষ থেকে এবং বাকি স্টলগুলি বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও দপ্তরের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে। ১৮তম আঞ্চলিক সরস মেলা আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা আরও বলেন, রাজ্যের মহিলাদের স্বশক্তিকরণে বর্তমান সরকার সদা পাশে রয়েছে। তাই এই সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নবম শ্রেণীতে পাঠরত রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রীকে বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়াও এবারের বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা নামক নতুন প্রকল্পে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রথম ১০০ জন ছাত্রীকে স্কুটি দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মহিলাদের সুবিধার্থে রাজ্যে মোট ৯টি মহিলা থানা, ৬টি ফ্যামিলি কোর্ট, প্রত্যেক জেলায় ১টি করে ওয়ান স্টপ সেন্টার চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাখপতি দিদি এবং ড্রোন দিদি এই কর্মসূচিতে দেশের মহিলাদের স্বশক্তিকরণের যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা পূরণে রাজ্য সরকারও বদ্ধপরিকর। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধাক্ষ রামপ্রসাদ পাল রাজ্যের মহিলাদের উন্নয়নে সরকার মিশন মুড়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের মুখ্যকার্যনির্বাহী আধিকারিক বি কাউর বলেন, এখন পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৮২ হাজারের উপর লাখপতি দিদি রয়েছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ১ লক্ষের বেশি লাখপতি দিদি বানানোর লক্ষ্য নিয়ে দপ্তর কাজ করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অতিথিগণ মেলা প্রাঙ্গণে কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. বিশাল কুমার।
0 মন্তব্যসমূহ