Advertisement

Responsive Advertisement

দিব্যাঙ্গ ইন্দ্রানী ভৌমিককে ২ হাজার টাকা করে সামাজিক ভাতার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষুতে


আগরতলা, ২ নভেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচির ২২ তম পর্বে আজ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার প্রত্যাশী মানুষ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহার সাথে সাক্ষাৎ করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবনে অন্যান্য দিনের মতো আজও দীর্ঘক্ষণ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনগণের অভাব, অভিযোগ ও নানাবিধ সমস্যার কথা শুনেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ যারা এসেছিলেন তারা সবাই হাসিমুখে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাৎক্ষণিক সহায়তার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিকভাবে প্রত্যেকের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেন।
নরসিংগড়ের নমিতা ভৌমিক তার স্কুল পড়ুয়া দিব্যাঙ্গ মেয়ে ইন্দ্রানীর চিকিৎসা এবং পড়াশুনার জন্য সহায়তার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন। অনেক চিকিৎসার পরও মেয়েটির শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে মেয়ের চিকিৎসা এবং পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী ইন্দ্রানী'র চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করার পরামর্শ দেন এবং চিকিৎসার ব্যাপারে সাহাযা করার আশ্বাস দেন। উপস্থিত সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি কমিশনারের সাথে কথা বলে প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদানের বিষয়টিও নিশ্চিত করেন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আগরতলার রেশমবাগানের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী প্রদ্যোৎ দাস তার দিব্যাঙ্গ ছেলের চিকিৎসা এবং পড়াশুনা চালাতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বহু কষ্টে তাদের দিনযাপন করতে হচ্ছে জেনে মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথে টেলিফোনে এলাকার বিধায়ক রতন চক্রবর্তীর সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় সাহায্যের আশ্বাস দেন। বিশালগড়ের বাসিন্দ ক্যান্সার আক্রান্ত বিশ্বজিৎ সাহাও চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে সর্বসান্ত হয়ে পড়েছেন। বিশ্বজিৎ সাহার এই অবস্থার কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাকে আর্থিক সাহায্য করার পাশাপাশি আগরতলার ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারকে বিশ্বজিৎ সাহার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ আগরতলার ইন্দ্রনগরের নোয়াগাঁও-এর বাসিন্দা সোমা মল্লিক দেবনাথ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। সোমা মল্লিক দেবনাথের স্বামী সঞ্জীব দেবনাথের চিকিৎসার পর গত জানুয়ারি মাসে হায়দ্রাবাদ থেকে টেনে ফেরার পথে চলন্ত ট্রেনে মৃত্যু হয়। ট্রেনে মৃত্যুর পর অসহায় সোমাদেবী ট্রেন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং রেলমন্ত্রক ও অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সহায়তায় রাজামুন্ডিতে সোমাদেবীর স্বামীর শেষকৃত্য পর্ব সম্পন্ন হয়। বিষয়টি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী আগেই অবগত রয়েছেন বলে সোমাদেবীকে জানান। সোমাদেবীর স্বামী ট্রাইবেল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গ্রুপ ডি পদে কর্মরত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর ডাই ইন হারনেসে ছেলে দীপ্তনীল দেবনাথের চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু সমস্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও গত ১০/১১ মাস ধরে তার চাকুরির কোনও ব্যবস্থা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন এবং সোমাদেবীকে আশ্বস্ত করেন। কুমারঘাটের অর্জুন দেবনাথের কন্যা সন্তানের চিকিৎসা, দক্ষিণ ত্রিপুরার মধ্য পিলাকের বিশ্বজিৎ ভৌমিকের নবজাতক সন্তানের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি জানিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী উভয় ক্ষেত্রে তাদের সন্তানের চিকিৎসায় জিবিপি
হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। পানিসাগরের ঋষিকেশ অধিকারী, দক্ষিণ ত্রিপুরার মনু বাজারের অনিল চন্দ্র জয়নগর আখাউড়া রোডের বিজয় কর, মধ্য বনমালিপুরের স্বরূপ সাহা'র মতো আরও অনেকেই চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাহায্য চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী, অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শিরমনি দেববর্মা, সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার অচিন্তম কিলিকদার সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকগণ আজ উপস্থিত ছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ