Advertisement

Responsive Advertisement

পানীয় জল পরিষেবায় ব্যাপক কাজ হয়েছে ৫বছরে


আগরতলা, ৫ ফেব্রুয়ারী: রাজ্যের বর্তমান সরকারের সকল সফল কাজের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ঘরে ঘরে বিনামূল্যে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং নতুন নতুন পানীয় জলের উৎস তৈরি করা। রাজ্য সরকারের আন্তরিক চেষ্টার ফলে ৩,৭৪,৬১৪টি পরিবারে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন খুশি বিরাজ করছে।
আগে রাজ্যের গ্রামীণ এবং পাহাড়ি এলাকা গুলির অন্যতম বড় সমস্যা ছিল পানীয় জলের। বছরের বিভিন্ন সময় এবং বিশেষ করে শুকা মৌসুম এলে রাজ্যের গ্রামীণ এবং পাহাড়ি এলাকায় গুলিতে তীব্র জল সংকট দেখা দিত। জনজাতি অংশের মানুষ দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ছড়া, ছোট নদী ও অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায়  ছোট ছোট গর্ত করে জল সংগ্রহ করত। অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উৎস থেকে জল সংগ্রহ করতেন। এই উৎসগুলো বেশির ভাগই ছিল পানের অযোগ্য এবং দূষিত। এইসব উৎস থেকে জল পান করে জল বাহিত ও পেটের নানা সমস্যায় পড়তেন তারা। এক সময় জাতীয় স্তরের সংবাদ মাধ্যম গুলোতে রাজ্যের খবরের প্রধান উৎস ছিল রাজ্যের পানীয় জলের সমস্যা। বামেরা দীর্ঘ বছর ক্ষমতায় থাকলেও সাধারণ মানুষের এই সমস্যাগুলো দূর করার বিষয়ে আন্তরিক ছিল না। তাই বছরের পর বছর গ্রামীণ এবং গিড়িবাসি মানুষদেরকে এইসব অস্বাস্থ্যকর উৎস থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে তৃষ্ণা মেটাতে হতো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই বিষয়টিতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। জল জীবন মিশনের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে বিনামূল্যে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 এই প্রকল্পে বর্তমান বিজেপি সরকার গত ৫বছরে পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষের জন্য যে সকল কাজ করেছে তার মধ্যে অন্যতম কিছু হলো, জলজীবন মিশনের অধীনে গ্রামীণ এলাকার ৩,৭৪,৬১৪টি পরিবারে পরিশ্রুত পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যে ৩৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কাউন্সিলে ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ১,৩৯৯টি জনপদ সম্পূর্ণ ভাবে ১০০ শতাংশ পানীয় জল সরবরাহের আওতায় এসেছে।
রাজ্যের ১,১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে গ্রামীণ জল ও স্বাস্থ্য বিধান কমিটি গঠন করা হয়েছে যাতে প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত হয়। এই কমিটির সদস্যরা স্থানীয় এলাকার কাজকর্মের  তদারকি করবেন যাতে গুণগত মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করা হয়।
রাজ্যে আরো পানীয় জলের উৎস তৈরি করার জন্য নতুন করে ১,৬৯০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহকারী ৬৯টি উৎস তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৬৪৩টি গভীর নলকূপ প্রকল্প ইতিমধ্যেই  চালু করা হয়েছে এবং 753 ৭৫৪টি ভূগর্ভস্থ পানীয় জল সরবরাহকারী পাম্প চালু হয়েছে। 
পরিশ্রুত পানীয় জলের জন্য শুধুমাত্র বড় বড় উৎসই তৈরি করা হচ্ছে না অসংখ্য ছোট ছোট উৎস তৈরি করা হচ্ছে যাতে করে ছোট ছোট জনপদ গুলিকেও পানীয় জল সরবরাহ করা যায়। এর প্রেক্ষিতে সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে ২৬৫৫টি ছোট বোর নলকূপ চালু করা হয়েছে এবং এমন আরো ২১৫৪টি দ্রুত চালু হবে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ৬১টি উদ্ভাবনী জল সরবরাহ প্রকল্প চালু করা হয়েছে এবং এমন আরো ২০১টি প্রকল্প খুব দ্রুত চালু হবে। 
 ভূগর্ভস্থ জলের উৎস তৈরীর পাশাপাশি ভূপৃষ্ঠেও জলের উৎস অর্থাৎ সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে, ইতিমধ্যে এমন ৩টি চালু হয়ে গিয়েছে এবং আরো পাঁচটি উৎস তৈরির কাজ চলছে। 
২,০৮৪টি পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরেই পরিশ্রুত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করেই বসে থাকছে না সরকার। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিশ্রুত পানীয় জল পায় তার জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ৪,৯৫৮টি স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে রাজ্য সরকার মানুষের কাছে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে সুস্থ ও রোগমুক্ত সমাজ গড়ার কাজ করছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা বারবার বলেন যে এই সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এবং প্রশাসনিক সুবিধাগুলিকে একেবারে সমাজের প্রান্তিক স্তর পর্যন্ত পৌঁছে নিয়ে যাওয়া। সুস্থ সমাজ গঠনের অন্যতম শর্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষদের সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখা। পানীয় জলের সমস্যা সমাধান হলে মানুষ ও স্বাভাবিক থাকতে পারে। এই লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ