Advertisement

Responsive Advertisement

জল সংরক্ষণে নজির গড়ল উত্তর জেলা প্রশাসন, দুই দিনে নির্মিত ৫৭,৫৮২টি সোকপিট



আগরতলা, ৪ নভেম্বর: জল সংরক্ষণের রেকর্ড করল রাজ্যের উত্তর জেলা প্রশাসন, মাত্র দুই দিনে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৫৭,৫৮২টি সোকপিট নির্মাণ করে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম নথিভুক্ত হলো। 
জলই জীবন—এই মন্ত্রকে ধারণ করেই ত্রিপুরার উত্তর জেলা প্রশাসন এগিয়ে এসেছে এক অনন্য উদ্যোগে। “উত্তর জল সংচয় যাত্রা ২০২৫” কর্মসূচির আওতায় ৩ এবং ৪ নভেম্বর এই দুই দিনে জেলা জুড়ে তৈরি হয়েছে মোট ৫৭ হাজার ৫৮২টি সোকপিট। এই উদ্যোগের মাধ্যমে উত্তর জেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছে এক ইতিহাস, যা রাজ্য তথা দেশের জল সংরক্ষণ অভিযানে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই বিপুল কর্মযজ্ঞের নেতৃত্বে ছিলেন উত্তর জেলার জেলা শাসক চাঁদনী চন্দ্রন। তার সঙ্গে জেলার অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকবৃন্দ কাজ করেছেন। পাশাপাশি কাঞ্চনপুর, দামছড়া ও দশদা উন্নয়ন ব্লকের আধিকারিক, কর্মচারী এবং গ্রামীণ জনগণ একযোগে অংশগ্রহণ করেন এই মহতী অভিযানে। এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য শুধু সোকপিট নির্মাণ নয়, বরং জল সংরক্ষণ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়, তাই জল সঞ্চয় যাত্রায় সকলের মিলিত ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 
উত্তর জেলার এই উদ্যোগে সক্রিয় সহযোগিতা করেছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও প্রকল্প। গ্রামীণ উন্নয়ন দপ্তর, স্যানিটেশন মিশন, জীবিকা প্রকল্প এবং স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থাগুলির সমন্বিত প্রচেষ্টাতেই এই বিরল সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
গ্রামীণ এলাকার মানুষও এই অভিযানে উৎসাহের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। অনেকেই নিজ উদ্যোগে বাড়ির পাশে ও মাঠের ধারে সোকপিট খনন করে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের বিশ্বাস, বৃষ্টির জল মাটির গভীরে পৌঁছে দিলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যতে কৃষি ও দৈনন্দিন জীবনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।
জল সংরক্ষণ আজকের দিনে শুধুমাত্র সরকারি প্রকল্প নয়, এক সামাজিক দায়িত্বও বটে। উত্তর জেলার এই নজির এখন সমগ্র রাজ্যের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। জলকে কেন্দ্র করে এই জনঅভিযান প্রমাণ করেছে—যদি প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ একসাথে কাজ করে, তবে বড় থেকে বড় লক্ষ্যও অর্জন করা সম্ভব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক বার্তায় এই সাফল্যের প্রশংসা করে বলেছেন, “উত্তর জল সংচয় যাত্রা ২০২৫” কেবল একটি প্রকল্প নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অমূল্য উপহার।
জল সংরক্ষণই জীবনের সংরক্ষণ—এই বার্তা ছড়িয়ে দিয়েই সমাপ্তি ঘটল এই দুই দিনের ঐতিহাসিক অভিযাত্রার। উত্তর জেলার এই সাফল্য গোটা ত্রিপুরাকে গর্বিত করেছে, আর এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ভবিষ্যতের টেকসই উন্নয়নের পথে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ