বর্তমান বিশ্বে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম যার প্রয়োজন তার নাম পাসপোর্ট, এই কাগজটি না থাকলে অন্য কোন দেশে যাওয়া যায় না একতা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু মাঝে মাঝেই মনের মধ্যে উঁকি দেয় পাসপোর্ট শব্দের অর্থ কি? চলুন তাহলে আজ জেনে নেই এর নানা অজানা তথ্য।
“পাসপোর্ট (Passport)” শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো “যাত্রাপত্র” বা “ভ্রমণের অনুমতিপত্র”। এটি এমন একটি সরকার-প্রদত্ত দলিল যা একজন নাগরিককে বিদেশে ভ্রমণ, প্রবেশ বা প্রত্যাবর্তনের অনুমতি প্রদান করে। সহজভাবে বলতে গেলে —
পাসপোর্ট হলো কোনো দেশের নাগরিকত্বের সরকারি প্রমাণপত্র, যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে পরিচয় ও নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেয়।
এই শব্দটির উৎপত্তি হলো যেভাবে
“পাসপোর্ট” শব্দটি এসেছে ফরাসি ভাষা থেকে —
ফরাসি শব্দ “Passeport” গঠিত হয়েছে দুটি অংশে —
“Passer” মানে হলো অতিক্রম করা। “Port” মানে হলো বন্দর বা প্রবেশদ্বার। অর্থাৎ মূলত “Passeport” মানে ছিল “বন্দর অতিক্রমের অনুমতিপত্র”। কারণ অতীতে এক দেশ থেকে অন্য দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জল পথেই যোগাযোগ করা হতো। তাই পোর্ট শব্দটি এসেছে — যেটি ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রমের সরকারি অনুমতিপত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে।
পৃথিবীর প্রথম পাসপোর্ট চালু করা দেশ
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ইংল্যান্ড (বর্তমান যুক্তরাজ্য) ছিল পৃথিবীর প্রথম দেশ যেখানে পাসপোর্ট ব্যবস্থার প্রচলন হয়। ১২শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে রাজাদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র দেওয়া হতো বিদেশে ভ্রমণের জন্য।
পরে King Henry V (১৪১৪ সালে) প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে “পাসপোর্ট” নামে নথিপত্র প্রবর্তন করেন। এই ব্যবস্থা পরবর্তীতে ২০শ শতকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত হয়।
ভারতে পাসপোর্ট চালুর ইতিহাস
ভারতে পাসপোর্ট চালু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। The Indian Passport Act প্রথম প্রণীত হয় ১৯২০ সালে — “Indian Passport Act of 1920” নামে।
তখন এটি ছিল বিদেশ ভ্রমণের জন্য বাধ্যতামূলক সরকারি অনুমতিপত্র।
স্বাধীনতার পর ভারতের নিজস্ব পাসপোর্ট ব্যবস্থা গঠিত হয় ১৯৬৭ সালের “Passports Act” অনুযায়ী, যা আজও কার্যকর।
0 মন্তব্যসমূহ