আগরতলা, ২৩ নভেম্বর: মহিলাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। আত্মনির্ভর ত্রিপুরা, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে মহিলাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে সব জায়গাতেই পারদর্শিতার সঙ্গে কাজ করছেন মহিলারা।
আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে ৮ নং বড়দোয়ালি মন্ডলের মহিলা মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আত্মনির্ভর ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটা জাতীয় মিশন। ২০২০ এর মে মাসে এটা শুরু হয়েছে। এখন আবার ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর এই কার্যক্রম চলবে। এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পরিকাঠামো, প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে উন্নয়ন করা। কোভিডের সময়কালে এসব বিষয় উপলব্ধি করা হয়েছে। যেটা আমাদের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছিলেন। নিজেরা আত্মনির্ভর না হলে কেউ যে সহায়তা করবে না সেটা উপলদ্ধি হয়েছিল তখন। তাই প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন ভোক্যাল ফর লোক্যাল। আমরাও ত্রিপুরায় ভোক্যাল ফর লোক্যাল এর শ্লোগান দিচ্ছি - হর ঘর স্বদেশী, ঘর ঘর স্বদেশী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত করতে হলে আত্মনির্ভর ত্রিপুরা করতে হবে। প্রতিটি রাজ্য যদি আত্মনির্ভর হয় তবেই আত্মনির্ভর ভারত গড়ে উঠবে। দেশের স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ২০৪৭ এ বিকশিত ভারত এর কথা বলছেন। সেজন্য প্রত্যেকটি রাজ্যকে বিকশিত হতে হবে। এখন স্বাস্থ্য পরিষেবার দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা রয়েছে এখানে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ক্রমশ উন্নত মানের করা হচ্ছে। আমি প্রায়শই দেখি যে অনেক লোক চিকিৎসার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালে চলে যায়। অথচ একটু কষ্ট করে জেলা হাসপাতাল কিংবা স্টেট হাসপাতালে চলে গেলে ভালো চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়। অনুরূপভাবে অনেক মানুষ আগেই টিকিট কেটে কাশ্মীর, ব্যাঙ্গালোর, সিকিম সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে যান ঘুরাঘুরির জন্য। এক্ষেত্রে আমাদের পয়সা কিন্তু বাইরে চলে যাচ্ছে। যদিও ত্রিপুরায় অনেক সুন্দর সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে গেলে আমাদের রাজ্যের মধ্যেই নিজেদের পয়সাগুলি থেকে যায়। তাই আগে নিজেদের আত্মনির্ভর ও শক্তিশালী করতে হবে।
আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মহিলারা হচ্ছেন সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মহিলাদের সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে আমাদের বর্তমান সরকার। সরকার মহিলাদের জন্য কি কি সুবিধা বা অধিকার দিয়েছে সে সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। সাম্প্রতিক বিহার নির্বাচনে মহিলারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। তাদের জন্য সেখানে বিপুল জয় হয়েছে আমাদের। জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ মহিলা। পরিবারের চালিকা শক্তি হচ্ছেন মহিলারা। সমাজ চালানোর ক্ষেত্রে কিংবা দেশ চালানোর ক্ষেত্রেও এগিয়ে আসছেন তারা। ট্রেন চালনা থেকে শুরু করে এরোপ্লেনও চালাচ্ছেন তারা। সব জায়গাতেই পারদর্শিতার সঙ্গে কাজ করছেন মহিলারা। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি মহাকাশ যানেও মহিলারা যাচ্ছেন। আত্মনির্ভর ত্রিপুরা, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে মহিলাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যখন বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যাই, সেখানে পুরস্কার বিতরনের সময় প্রায় ৭০% মেয়েরা থাকেন। সমাজের জন্য, রাজ্যের জন্য ও দেশের জন্য মহিলাদের ভূমিকা অপরিহার্য। যেসব জায়গায় নারীদের স্থান উঁচুতে রাখা হয় সেই সমাজের উন্নয়নও অনেক উপরে থাকে। আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বলছি। আমরা চাই মহিলাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ভালো হোক। আর সেই দিশায় কাজ করছে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি নিজেদের আত্মবিশ্বাস আরো বৃদ্ধি করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, সদর আরবান জেলা সভাপতি অসীম ভট্টাচার্য, সদর আরবান জেলা সভানেত্রী ঝুমা বিশ্বাস, বড়দোয়ালি মন্ডল সভাপতি শ্যামল কুমার দেব সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং দলের নেতৃত্ব।
0 মন্তব্যসমূহ