Advertisement

Responsive Advertisement

মুঙ্গিয়াকামিতে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৬,৪০০ ভোটারের বিজেপিতে যোগদান




আগরতলা, ২৪ অক্টোবর: শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে সশস্ত্র আন্দোলন করেছে সিভিল সোসাইটি। তাদের আসল রূপ এখন সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে। আর জনজাতি অংশের মানুষের উন্নয়নে যা যা করার দরকার সেটা করবে রাজ্যের বর্তমান সরকার। এক্ষেত্রে কোন ধরণের সমঝোতা করা হবে না। 

                                  আজ খোয়াই জেলার মুঙ্গিয়াকামি এলাকায় ভারতীয় জনতা পার্টির কৃষ্ণপুর মন্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত যোগদান সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
                                 সভায় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজ পরিমল দেববর্মা ও সঞ্জীব দেববর্মা সহ প্রায় ৬,৪০০ জন ভোটার ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছেন। সঠিক সময়ে আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি ছাড়া এডিসি, রাজ্য বা দেশ সঠিক দিশায় এগিয়ে যাবে না। যারা আজ এখানে যোগদান করতে এসেছেন আমি ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে তাদের সকলকে স্বাগত জানাই। কিছুদিন আগে টাকারজলায় এধরণের একটা যোগদান সভা হচ্ছিল। আর সেই যোগদান সভা যাতে সম্ভব না হয়, সেজন্য এই মথার মুখোশধারী কিছু দুর্বৃত্ত জনসভায় যোগ দিতে আসা আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালায়। আবার সিভিল সোসাইটি নাম দিয়ে এমন একজন ব্যক্তির (মুখোশধারী) নেতৃত্বে আন্দোলন সংঘটিত করা হয়েছে। এটা কোন ধরণের আন্দোলন? আমাদের কার্যকর্তা, বিডিও, ইঞ্জিনিয়ার, এসডিপিও সহ সবাইকে যেভাবে দা, লাঠি, রড দিয়ে আক্রমণ করেছে, আর এটাকে বলছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন! এটা কোন ধরণের আন্দোলন করছে তারা? আমি তাদের নেতাদের প্রশ্ন করতে চাই। কিন্তু যখনই দেখে অবস্থা খারাপ, তখনই অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করে তারা। আবার কিছুদিন পর বলবে যে আমরা শান্তি চাই, শান্তি চাই। কিন্তু তাদের আসল রূপ এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি। 

                                   মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ মুঙ্গিয়াকামিতে যোগদান সভাকে ঘিরে ঘরে ঘরে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করার চেষ্টা হয়েছে। বলা হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির মতো জাতীয় দলকে এডিসি এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের যেকোন জায়গায় যেতে পারে। কেউ তাদের রুখতে পারবে না। আমি তাদের হুশিয়ার করে দিচ্ছি যে এধরণের চালাকি দিয়ে সাময়িক কাজ হবে। কিন্তু বেশিদিন চলবে না। 
                                     সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে জনজাতি অংশের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন। গত এডিসি নির্বাচনের সময় ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি হিসেবে আমি বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যালয় তছনছ করে রেখে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের ছবিও মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছিল। সেই ছবি তুলে আমরা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আর তারা বলছে যে আমরা রাজ পরিবারের ব্যক্তিদের সম্মান করি না! কিন্তু আমরা ৩৫ বছরের রাজত্ব ও কংগ্রেসের ৫ বছরের রাজত্ব দেখেছি। তারা কোনদিন মহারাজাদের সম্মান দেয়নি। ভারতীয় জনতা পার্টি আসার পর মহারাজ বীর বিক্রমের নামে এয়ারপোর্টের নামকরণ করা হয়েছে। এয়ারপোর্টে মহারাজার পূর্ণবয়ব মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। কামান চৌমুহনি সংলগ্ন আইল্যান্ডে মহারাজার মূর্তি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। মহারাজা বীর বিক্রমকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁর জন্মদিন ১৯ আগস্ট দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। 

                                  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে জনজাতি অধ্যুষিত ১২টি ব্লককে অ্যাসপিরেশন্যাল ব্লক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। 
 
                                     মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর জনজাতিদের সম্মান দেওয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এছাড়াও জনজাতি গোষ্ঠীর উপ গোষ্ঠীর সমাজপতি বা প্রধানদেরকেও ৫ হাজার টাকা সাম্মানিক প্রদান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই দিশায় কাজ করছে সরকার। জনজাতিদের কল্যাণের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মহকুমা ও জেলা পর্যায়ে আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। 

                                  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে ২০২৪ এর ৪ সেপ্টেম্বর এনএলএফটি ও এটিটিএফের সঙ্গে ত্রিপুরা সরকারের একটা সমঝোতা চুক্তি হয়। সেই চুক্তির নিরিখে তারা অস্ত্র সমর্পন করে। জনজাতি অংশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলায় ৮৪টি বনধন বিকাশ কেন্দ্র করা হয়েছে। জনজাতি এলাকায় আরো উন্নয়নের জন্য বিশ্ব ব্যাংক থেকে ১৪০০ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। জনজাতি অংশের মানুষের উন্নয়নে যা যা করার দরকার সেটা করবে সরকার। বিশেষ অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্যাকেজের আওতায় ১,৩১৬টি পরিবারের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়তা করা হয়েছে। ১০০টি মার্কেট স্টল নির্মাণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি বিকাশ যোজনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৯,৩২৬ জন জনজাতি সুবিধাভোগীকে ২৫,০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। 

                                   যোগদান সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক বিপিন দেববর্মা, প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, জেলা সভাপতি বিনয় দেববর্মা, এডিসি সদস্য বিদ্যুৎ দেববর্মা সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্ব ও কার্যকর্তাগন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ