Advertisement

Responsive Advertisement

আন্তর্জাতিক আলু গবেষণা কেন্দ্রের মহা নির্দেশক নাগিছড়া উদ্যান গবেষণা পরিদর্শনে আসছেন


আগরতলা, ৮ সেপ্টেম্বর : আমেরিকার আন্তর্জাতিক আলু গবেষণা কেন্দ্রের মহা নির্দেশক নাগিছড়া উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রে আসছেন। পেরুর লিমায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টার (International Potato Center - CIP)-এর মহা নির্দেশক তথা গ্লোবাল ডিরেক্টর ড. সাইমন হেচ ১২ সেপ্টেম্বর আগরতলা সংলগ্ন নাগিছড়া উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে আসছেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন ভারতের কান্ট্রি ম্যানেজার এবং সিনিয়র সায়েন্টিস্টরা।

এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো ত্রিপুরা রাজ্যে অ্যারসি (Aeroponic Root Cutting - ARC) প্রযুক্তিতে আলু চাষের সাফল্য ও ব্যাপ্তি খতিয়ে দেখা। বর্তমানে রাজ্যে আলু বীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা আনার লক্ষ্যে উদ্যান দফতর যে কার্যপদ্ধতি গ্রহণ করেছে, তা আন্তর্জাতিক মানে আরও শক্তিশালী করার দিকেই নজর থাকবে।

সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক
ড. হেচ কৃষি মন্ত্রী, কৃষি সচিব, উদ্যান অধিকর্তা এবং রাজ্যের নীতি-নির্ধারণী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা, ২০২৮-২০২৯ এবং ২০২৯-২০৩০ সালকে লক্ষ্য বর্ষ ধরে রাজ্যের আলু উৎপাদনে স্বনির্ভরতার রূপরেখা তৈরি হবে।

ত্রিপুরায় প্রতিবছর প্রায় ২.৫ থেকে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলু চাহিদা থাকে। এর মধ্যে বড় অংশ রাজ্যের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। কিন্তু নাগিছড়া গবেষণা কেন্দ্রে উদ্ভাবিত ARC প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজস্ব উচ্চমানের বীজ উৎপাদন হলে রাজ্য নিজেই আলু উৎপাদনে স্বয়ম্ভর হতে পারবে।

নাগিছড়া গবেষণা কেন্দ্রের ভূমিকা
নাগিছড়া গবেষণা কেন্দ্র ইতিমধ্যেই মাইক্রো-টিউবার এবং টিস্যু কালচার প্রযুক্তির মাধ্যমে আলু বীজ উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। বর্তমানে এখানে প্রস্তুতকৃত বীজ থেকে ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্যের নজির তৈরি হয়েছে। কৃষকরা কম খরচে এবং ভালো ফলনের আশা দেখতে পাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন অধ্যায়
ড. হেচ-এর এই সফর শুধু ত্রিপুরার কৃষি নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। আন্তর্জাতিক মানের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ কৃষকদের জন্য এক বিরল অভিজ্ঞতা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি আলু থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য শিল্প গড়ে তোলা এবং রপ্তানি সম্ভাবনা নিয়েও দিকনির্দেশনা আসতে পারে।

লক্ষ্য – স্বনির্ভরতা ও কৃষকের আয় বৃদ্ধি
ত্রিপুরা সরকার যে রোডম্যাপ তৈরি করেছে, তার মূল লক্ষ্য শুধু আলু আমদানি বন্ধ করা নয়, বরং স্থানীয় কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা এবং কৃষিজ অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করা।

আগামী দিনের পরিকল্পনায় আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন, গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ