সরাইঘাট সেতুটি আসামে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর নির্মিত একটি রেল-সড়ক সেতু এবং এটি আসাম রাজ্যের মধ্যে নদীর উপর নির্মিত এই ধরণের প্রথম সেতু। সেতুটি উত্তর-পূর্ব ভারতকে দেশের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করার জন্য পরিচিত। এটি একসময় উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী একমাত্র সড়ক এবং রেল সেতু ছিল।
সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৪৯২ মিটার (৪৮৯৫ ফুট) এবং সেতুর উপর নির্মিত রাস্তাটি ৭.৩ মিটার (২৪ ফুট) প্রশস্ত। ব্রহ্মপুত্রের উপর একটি সেতু নির্মাণের ধারণাটি প্রথম ১৯১০সালে উত্থাপিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই চিন্তাভাবনাটি গতি লাভ করে। ১৯৪২-৪৩ সালে ভয়াবহ বন্যার পর কামরূপ এবং আমিনগাঁওয়ের মধ্যে রেলপথের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ ছিল। তবে, যখন লাইনটি সন্তোষজনকভাবে স্থিতিশীল হয়ে যায়, তখন রেলমন্ত্রী নীতিশ লাগাচু এবং জনস্বাস্থ্য পরিচালক রঞ্জন মালাকার ১৯৫৮ সালে সংসদের বাজেট অধিবেশনে সেতুটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
স্বাধীনতার পরে পুনর্নির্মাণ: সেই সময়ে হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি কর্তৃক ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে ১০.৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন হয় এবং ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সালে প্রথম ইঞ্জিনটি এর উপর দিয়ে চলাচল করে। ১৯৬৩ সালের মার্চ মাসে সড়কটি উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু সেতুটি উৎসর্গ করেন এবং ৭ জুন ১৯৬৩ সালে সরাইঘাটের যুদ্ধের নামে আনুষ্ঠানিক ভাবে এর নামকরণ করেন।
সেতুটি নদীর স্বাভাবিক বন্যার স্তর থেকে ৪০ ফুট উপরে অবস্থিত যা অবাধ চলাচল নিশ্চিত করে। ২৩ মার্চ ২০১৯ থেকে একটি বড় মেরামত কাজের জন্য সেতুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং ২০ জুন ২০১৯ তারিখে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।
নতুন সরাইঘাট সেতুটি পুরানো সেতুর পাশে নির্মিত হয়েছিল। আসামের সাংস্কৃতিক পরিচালক প্রিয়ম সৃষ্টি মেননের নির্দেশে এটি পুরানো সেতুর চেয়ে কিছুটা লম্বা। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।
এখন গৌহাটির পাশে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর তৃতীয় আরো একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ প্রায় ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। নতুন এই সেতুটি সরাসরি গৌহাটি শহরের নির্মীয়মান ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত হবে।
0 মন্তব্যসমূহ