আগরতলা, ২৮ জুন: শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যে এখন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ত্রিপুরায় পড়াশুনার জন্য এখন বাইরে থেকেও ছাত্রছাত্রীরা আসছে। আর সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক কাজে যুক্ত হওয়া উচিত ছাত্রছাত্রীদের।
আজ আগরতলার মুক্তাধারা প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক মেরিট কাম - মিনস অ্যাওয়ার্ডস- ২০২৫ অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের সুফল পৌঁছানো না গেলে একটা রাজ্য বা দেশের উন্নতিসাধন সম্ভব নয়। আজ এখানে মেধা সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। সমাজের কল্যাণে সরকারের পাশাপাশি আপনারাও প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। সমাজ সেবার এই মহৎ কাজে আপনাদের দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিককে সারা ত্রিপুরার মানুষই জানেন। রাজ্যের জন্য একটা পরিচিত নাম তিনি। ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন তিনি। বহু মানুষের কাছে আস্থা ছিলেন তিনি। ত্রিপুরায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটা ভিত তৈরি করে দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন। যেকোন বিষয়েই শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। যুগ যুগ ধরে শিক্ষার যাত্রা চলতে থাকবে। পড়াশুনা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে শিক্ষা নিতে হবে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করলেই সাফল্য পাওয়া যায় না। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেও অনেকে জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারে না। শিক্ষার শেষ নেই। শিক্ষা অন্তহীন। অজ্ঞানতা ও জ্ঞানের মাঝে এবং অন্ধকার ও আলোর মাঝেই শিক্ষা সেতু হিসেবে কাজ করে। যার যতো বেশি জ্ঞান থাকবে তিনি ততোই মাটির সংস্পর্শে থাকবেন।
আমাদের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলছেন সবাইকে যোগা ব্যায়াম করা উচিত। এতে নিজেকে জানা যায় নিজেকে চেনা যায়। আগে আমাদের ভারতবর্ষের নালন্দা, তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরে থেকে মানুষ পড়তে আসতেন। দেশের সেই ঐতিহ্য আবারো ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশে চালু হয়েছে জাতীয় শিক্ষা নীতি। প্রধানমন্ত্রী মোদির নির্দেশনায় আমাদের রাজ্যেও স্কুল কলেজে জাতীয় শিক্ষা নীতি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ত্রিপুরায় পড়াশুনার জন্য এখন বাইরে থেকে মানুষ আসছেন। এখানে ওপেন ইউনিভার্সিটি, টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, ইকফাই ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধ ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এখন রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে এমবিবিএস এর আসন সংখ্যা ৪০০ হয়েছে। ডেন্টাল কলেজে ৬৩টি আসন হয়েছে। রাজ্যে ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ফরেনসিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল সংস্কৃত ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি স্বামী শুভকরানন্দ মহারাজ, টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রতন কুমার সাহা, এমবিবি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. বিভাস দেব, ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সঞ্জয় পাল সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ