শ্রাবণ মাসে শিবের আরাধনা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। অনেকেই এই মাসে শিব ও মা পার্বতীর আরাধনায় নিজেদের লিপ্ত রাখেন। শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিকে খুবই শুভ বলে মনে করা হয় তাই। শ্রাবণে শিবলঙ্গে, মধু, দুধ, বেলপাতা, ধুতরা ও আকন্দ ফুল, জল অর্পণ করার রীতি রয়েছে। প্রতি সোমবার এই রীতি পালন করে দেবাদিদেবকে তুষ্ট করা হয়। পৌরাণিত কাহিনি অনুযায়ী, শ্রাবণ মাসেই সমুদ্র মন্থনের ঘটনা ঘটেছিল। সমুদ্র উত্থিত হলাহল বিষ থেকে গোটা ধরিত্রীকে রক্ষা করার জন্য স্বয়ং মহাদেব নিজ কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। বিষের প্রভাবে মহাদেবের কন্ঠ নীল হয়ে ওঠে। এই কারণেই মহাদেবের অপর নাম নীলকণ্ঠ। বিষের তীব্রতা হ্রাস করার জন্য স্বর্গের দেবতারা শিবের মাথায় গঙ্গাজল ঢালতে থাকেন। সেই কারণেই শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় গঙ্গাজল প্রদান করা হয়। আর তাতেই আদিদেবের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হন ভক্তরা।
আরেকটি কাহিনিতে উল্লেখ রয়েছে, সতীর দেহত্যাগের পর দেবী পার্বতী রূপে ফের একবার জন্ম নেন। শিবকে আবার স্বামীরূপে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা করতে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে সাধনা করে শিবকে সন্তুষ্ট করলে পার্বতীকে বিবাহ করতে রাজি হন মহাদেব। আর সেই শুভমুহূর্ত ঘটে শ্রাবণ মাসেই। শিবরাত্রির দিনেই শিব-পার্বতীর পুনর্মিলন ঘটেছিল। এই কারণেই শ্রাবণ মাসকে শিবের মাস বলা হয়।
চলতি বছরের শ্রাবণ মাস আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ ১৯ বছর পর শ্রাবণ মাসে ঘটতে চলেছে এক মহাজাগতিক ঘটনা। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এবছর ৩০ দিন নয়, টানা ৫৯দিন ধরে পালিত হবে শিবের মাস। তার মানে একমাস নয়, ২ মাস ধরে চলবে শিবের উপাসনা। মলমাস শুরু হওয়ায় শ্রাবণ মাস পালিত হবে পর পর ২ মাস ধরে। ভোলেনাথের পুজো করতে ৪ সোমবার নয়, ৮ সোমবার বিশেষ পুজো করতে পারবেন শিবভক্তরা।
0 মন্তব্যসমূহ