Advertisement

Responsive Advertisement

জম্পুই'র কমলা গাছের মতো সুপারি বাগানের যাতে পরিণতি না হয়ে তাই তৎপর রাজ্য সরকার

 

কাঞ্চনপুর, ৩১ জুলাই : উত্তর জেলায় বিশেষ করে কাঞ্চনপুর মহকুমার অন্তর্গত জম্পুই পাহাড়ে কোলেরোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ সুপারি বাগান মালিকদের প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহ যোগিতা করা হবে বলে জানালের রাজ্য সরকারের উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দফতরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস।  
  এক সময় জম্পুই পাহাড় কমলা লেবুর জন্য বিখ্যাত ছিল, কিন্তু অজানা রোগের কারণে কমলা বাগান গুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এখন জম্পুই পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে সুপারি চাষ হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ পায় সুপারি গাছে কোলেরোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কমলা বাগানের মত সুপারি চাষে যেন বেহাল অবস্থা না হয় তাই তৎপর রাজ্য সরকার। রোগ আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তর তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আগরতলা থেকে ত্রিপুরা সরকারের উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাসের নেতৃত্বে একটি টিম জম্পুই পরিদর্শনে যায়। এই টিমে ছিলেন আগরতলার রাজ্যিক উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ডেপুটি ডিরেক্টর ড রাজীব ঘোষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড দূর্গা আস্তি, কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের দুই গবেষক যথাক্রমে ড নাগারাজু, ড এস প্রতাপ, রাজ্যিক উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অবিনাশ দাস, কাঞ্চনপুর কৃষি মহকুমার এস এ কবীর দেববর্মা প্রমুখ। 
উপস্থিত সকলে জম্পুই পাহাড়ের মনপুই ও বেলিয়ানচিপ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক বাগান ঘুরে দেখেন ও বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাগান মালিকদের সঙ্গে। সব শেষে স্থানীয় কমিউনিটি হলে সকলে মিলে বসে পর্যালোচনা করেন। সুপারি চাষীরা তাদের সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন, সেই সঙ্গে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরকারী সহযোগিতার কথা বলেন। 
কৃষকদের কথা শুনার পর ডিরেক্টর দীপক কুমার দাস বলেন, রাজ্য সরকার এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ ভাবে তৎপর তাই সমস্যার কথা জানতে পেরে বিশেষদের নিয়ে টিম গঠন করা হয়েছে। তারা এসেছেন এবং কথাবার্তা বলে সকলের মতামত জানা হয়েছে এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে কিভাবে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যায়। সমস্যার সমাধানের জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এই বিষয়ে পর্যালোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি কৃষকরা বিকল্প কিছু চাষ করতে চান এই বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে জানান। 
এদিনের এই পরিদর্শনের বিষয়ে ড রাজীব ঘোষ বলেন, এই বাগানগুলিতে রোগের প্রাদুর বেশি হওয়ার জন্য বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে, এই কারণগুলি হল একি জমিতে দীর্ঘ বছর ধরে একই জাতের ফসল চাষ করার ফলে এবং জমিতে যে পরিমান দূরত্ব বজায় রেখে গাছ লাগানো উচিৎ তা না মেনে কম জমিতে বেশী পরিমান গাছ লাগানোর ফলে রোগের সংক্রমন দ্রুত হয়েছে। তা ছাড়া তারা বৃষ্টির জল সংগ্রহ করছেন এবং এগুলো আবার চাষের কাজে ব্যবহার করছেন। এই জলে এই রোগের সংক্রম রয়েছে যা সংক্রমন বাড়িয়ে দিয়েছে, তাই দ্রুত বৃষ্টির জল সুপারি চাষে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন মাত্র একটি ফসল চাষ করে অর্থনীতি মজবুত করা সম্ভব নয়, কিন্তু এই এলাকার মানুষ তাই করে আসছেন। তাই জমি থেকে যাতে সারা বছর নানা জাতের ফসল পাওয়া যায় এই বিষয়টি বিবেচনা করে মিশ্র চাষ শুরু করার পরামর্শদেন। 
প্রতিনিধি দলটি তাদের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি রিপোর্ট আকারে জমা করা হবে ও এর প্রেক্ষিতে সংক্রমণ দূরীকরণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ