আগরতলা, ১৬ জুলাই: রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন, চাকরি প্রদান, স্বচ্ছতা, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, জনজাতি উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান সরকার। স্বচ্ছতা, মেধা ও যোগ্যতার নিরিখে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি প্রদান করছে সরকার। ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত ডাই ইন হারনেস সহ মোট ১৯,৭৪২ জনকে নিয়মিত পদে চাকরি দিয়েছে এই সরকার।
আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে পূর্ত দপ্তরের অধীনে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ পত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা চাকরি প্রাপকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতি হচ্ছে। এখন আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর যুগ। প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশনা ও চিন্তাভাবনা অনুযায়ী কাজ করছে আমাদের সরকারও। জাতি জনজাতি, গরীব সহ সব অংশের মানুষের কল্যাণে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস, সবকা বিশ্বাস এর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সমাজের ১৮টি শ্রেণীর মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্য পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা চালু করেছেন তিনি। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর সেই প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটারও নিয়মিত তদারকি করছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুন্দর ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এবারের বাজেটে ৭ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সংস্থান রাখা হয়েছে। আর এই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে আগামী বছর এই বাজেটকে ১০ হাজার কোটি টাকায় নেওয়া যায়। রাজ্যের বাজেট ২৭ হাজার কোটি থেকে এবার ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। আর সেটা এমনিতে সম্ভব হয়নি। স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে এবং বিভিন্ন প্রকল্প সঠিকভাবে রূপায়ণ করার জন্য সেটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের কাজকর্ম প্রত্যক্ষ করেছে। যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের কাজের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এই সরকারের উপর আস্থা বেড়েছে চাকরি প্রাপক ও অভিভাবকদের। কারণ এই সরকারের আমলে চাকরির জন্য মিছিল করতে হয় না, পার্টি অফিসে যেতে হয় না কিংবা কোন নেতাকে ধরতে হয়না। মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার নিরিখে এই সরকার যোগ্য ব্যক্তিদের চাকরি প্রদান করে। আর চাকরিতে নিয়োগের পর যথাযথ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। সেই ব্যবস্থাও করছে সরকার। ডাঃ সাহা বলেন, আমাদের এখন ন্যাশনাল হাইওয়ে ৬টা হয়েছে। আরো প্রায় ৯০০ কিলোমিটারের মতো ডিজাইন হয়েছে। এছাড়া রয়েছে স্টেট হাইওয়ে, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক সহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট। মাটির অবস্থা পরখ করেই রাস্তাঘাটের ডিজাইন করতে হবে। সরকার যেসমস্ত উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ও কাজকর্ম করছে সেটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব ইঞ্জিনিয়ারদের। কাজেই সেভাবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে তাদের।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ২৭ জুন পর্যন্ত ডাই ইন হারনেস সহ ১৯,৪৮৪ জনকে চাকরি প্রদান করেছে এই সরকার। আর আজকের দিন পর্যন্ত মোট ১৯,৭৪২ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিং এ আরো চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে দেশের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষর রাজ্যের স্বীকৃতি অর্জন করেছে ত্রিপুরা। এখন ফ্রন্ট রানার স্টেট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে আমাদের রাজ্য। মাথাপিছু আয় ও জিএসডিপি ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। পিএম কৌশল বিকাশ যোজনা থেকে শুরু করে স্কিল ইন্ডিয়া মিশন, ডিজিটাল ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে পড়াশুনার জন্য এখন আর আমাদের ছেলেমেয়েদের বাইরে যেতে হয় না। রাজ্যেও এখন উন্নত পরিকাঠামো নিয়ে অনেক কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়, কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ, পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী সহ পূর্ত দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। উল্লেখ্য, এদিন মোট ১৮৪ জনকে নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হয়।
0 মন্তব্যসমূহ