আগরতলা, ১৭ জুন: ত্রিপুরার কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে ‘লম্বা মানুষ’ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপিকে নিয়ে কটূক্তির জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
সোমবার এক সাংবাদিক সন্মেলনে মন্ত্রী নাথ বলেন, সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা মন্তব্য করেছেন যে “উঁচু মানুষরা বোকা”— যা অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য।
তিনি বলেন, “এই মন্তব্য শুধুমাত্র ত্রিপুরার বর্ষীয়ান নেতাদের নয়, দেশ-বিদেশের অসংখ্য উঁচু গড়নের মানুষকে অপমান করে।”
মন্ত্রী নাথ বলেন, “বিরোধী দলনেতা বলেছেন, উঁচু মানুষরা বোকা। উনি কি জানেন না, তার নিজের দলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এবং প্রাক্তন মন্ত্রী অঘোর দেববর্মাও উচ্চতা সম্পন্ন? এরকম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য তার মানসিক অস্থিরতা এবং হতাশারই প্রতিফলন।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিরোধী দলনেতা, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও বিজেপিকে “প্রতারক” বলেও আখ্যা দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ মানহানিকর।
মন্ত্রী নাথ বলেন, “যদি উনি মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন, তাহলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। না হলে সিপিআই(এম)-এর উচিত তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এ ধরনের আচরণ একজন প্রবীণ নেতার থেকে শোভা পায় না এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশের পক্ষে হানিকর।”
তিনি আরও দাবি করেন, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পূর্বে অভিযোগ ছিল “আদা কেলেঙ্কারি” সংক্রান্ত। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী অনিল সরকার একটি ফাইল খুলেছিলেন যাতে চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নথিভুক্ত ছিল।
এছাড়াও, ব্রাহ্মণদের গো-মাংস ভক্ষণ সংক্রান্ত চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে নাথ বলেন, “এই মন্তব্য শুধুমাত্র ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত নয়, একজন দায়িত্বশীল নেতার কাছ থেকে একেবারেই অপ্রত্যাশিত।”
মন্ত্রী নাথ বিরোধী দলনেতাকে ত্রিপুরার উন্নয়ন নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “বিপ্লব কুমার দেব থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা— দুই সরকারের আমলেই ত্রিপুরায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা নজিরবিহীন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো ও জনজাতি কল্যাণে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “৩৫ বছর ক্ষমতায় থেকেও সিপিআই(এম) শেষ নির্বাচনে একটি জনজাতি আসনও জিততে পারেনি। এটা প্রমাণ করে কারা আসলে জনজাতি মানুষের জন্য কাজ করেছে।”
শেষে মন্ত্রী রতন লাল নাথ অভিযোগ করেন, “বিরোধী দলনেতা ইচ্ছাকৃতভাবে জনজাতি সমাজকে বিভ্রান্ত করছেন এবং রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত করতে চাইছেন।”
0 মন্তব্যসমূহ