অয়ন নাগ, ধর্মনগর, ৬ অক্টোবর: দূর্গাপূজার চাঁদা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। নিরীহ পূজা উদ্যোগকারী অংশের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, মারধর, গাড়ি ভাঙ্গচুর করে সংখ্যালঘু অংশের মানুষ বলে অভিযোগ। পুলিশের দফায় দফায় মৃদু লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে, সেই সঙ্গে জারি ১৬৩ বিএনএস কার্ফু।
ঘটনা উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রবিবার দুপুর নাগাদ কদমতলা থানাধীন লালছড়া ইছাইরপাড় এলাকার বাসিন্দা জওহর মিয়া তার নিকট আত্মীয়দের নিয়ে গাড়ি করে চিকিৎসার জন্য অসমের মাকুন্দা হাসপাতালে যাচ্ছিল। তখন কদমতলা হাপাইটিলা এলাকা সংলগ্ন ইন্ডিয়ান ক্লাবের সদস্যরা দূর্গা পূজার চাঁদা দেওয়ার জন্য তাদের গাড়িটি দাঁড় করিয়ে অনুরোধ করে। তখন গাড়ির চালক তাদেরকে গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ কদমতলা থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানান। মুহুর্তে শুনশান হয়ে যায় ব্যাস্ততম কদমতলা বাজার। যুবক কদমতলা থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এরই মাঝে কিছু অতিউৎসাহী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ কদমতলা বাজারের কয়েকটি দোকানের বাইরে থাকা সরঞ্জামে ভাঙচুর চালায়। কদমতলা বাজার এলাকার একাধিক বাড়িতে হামলা, গাড়ী ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় পূজা উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত মহিলাদের। মুহুর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেরেমিয়া ডার্লং। এদিকে কদমতলা থানার ওসি জয়ন্ত দেবনাথ পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠি চার্জ করেন। কদমতলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। মোতায়েন করা হয় পুলিশ, টিএসআর ও আধাসামরিক বাহিনী। সন্ধ্যার পর পুলিশ আবার লাঠি চার্জ করলে কয়েকজন নিরীহ দোকানি আঘাতপ্রাপ্ত হন। এদিকে রাত আটটা পর্যন্ত কদমতলা থানায় বসে থাকেন পুলিশ সুপার।তবে এদিন পুলিশ সুপারের ভূমিকায় সন্তোষ্ট হননি কেউ বলেও অভিযোগ। অবশেষে আইনশৃঙ্খলার কথা ভেবে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ জেলা পুলিশ প্রশাসনের তরফে কদমতলা কুর্তি বিধানসভা এলাকা জুড়ে ১৬৩ বিএনএস কার্ফু জারি করা হয়। সংবাদ লেখা পর্যন্ত থমথমে পরিস্থিতি গোটা বিধানসভা জুড়ে।
0 মন্তব্যসমূহ