Advertisement

Responsive Advertisement

প্রস্তাবিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজে বসন্ত উৎসবের আয়োজন

আগরতলা, মার্চ ২০: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রস্তাবিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই উপলক্ষ্যে ‘বসন্ত উৎসব’ ও ‘ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেলা’-র আয়োজন করা হয়েছে।
স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতা নিয়ে ও তাদের সঙ্গেই নিয়ে উৎসব পালন ও এই মেলার উদ্যোগ নিয়েছে প্রস্তাবিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কতৃপক্ষ। 
ত্রিপুরার সাথে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের সুদীর্ঘ সম্পর্ক। যা নিবিড় হয় ত্রিপুরার মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্যের সময় থেকে। ইতিহাস বলছে, তরুণ বয়সে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘ভগ্নহৃদয়’ কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম অভিনন্দন পেয়েছিলেন ত্রিপুরার মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্যের কাছ থেকে। ১২৮৯ বঙ্গাব্দে মহারাজা বীরচন্দ্রের প্রধানা মহিষী ভানুমতী দেবীর জীবনাবসান ঘটে। শোকসন্তপ্ত হৃদয়ে রাজা তখন বিরহের কবিতা লিখে লিখে শোকভার লাঘব করার চেষ্টা করছিলেন, ঠিক এই সময়েই মহারাজার হাতে আসে তরুণ কবি রবীন্দ্রনাথের ‘ভগ্নহৃদয়’। এই কাব্যগ্রন্থটি হাতে পেয়ে তিনি যেন বিরাট আশ্রয় পেলেন। ‘ভগ্নহৃদয়’ পাঠের পর পরই মহারাজ বীরচন্দ্র তাঁর নিজস্ব সচিব শ্রদ্ধেয় রাধারমন ঘোষ মহাশয়কে কলকাতার জোডড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পাঠালেন কবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার জন্য। মুগ্ধ মহারাজ বীরচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে ভূষিত করেন ‘কবি’ উপাধিতে। রবীন্দ্রনাথের জীবনে এই প্রথম ‘কবি’ স্বীকৃতি লাভ। সেই প্রথম কোন খেতাবপ্রাপ্তি। জীবনে প্রথম সম্মান লাভের সঙ্গে সঙ্গে ‘ত্রিপুরা’ শব্দটি সেদিন থেকে রবীন্দ্রনাথের অন্তরে গেঁথে যায়। যুবক রবীন্দ্রনাথের প্রতিভাকে সেদিন শুধু ত্রিপুরার মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য আবিষ্কার করেছিলেন। সেই সূত্র ধরে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রায় ৬০ বছরের সম্পর্ক ছিল ত্রিপুরার। মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য থেকে শুরু করে তার প্রপৌত্র মহারাজা বীরবিক্রম-ত্রিপুরার এই চার রাজার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সুসম্পর্ক ছিল। যার জন্য একাধিকবার ত্রিপুরায় এসেছেন তিনি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ত্রিপুরার এই গভীর সম্পর্ককে স্মরণে রেখেই রবীন্দ্র ভাবনায় বসন্ত উৎসব ও মেলার আয়োজনের প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। 
প্রস্তাবিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পক্ষ থেকে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে বসন্ত উৎসব পালনের জন্য আগামী ২৫শে মার্চ ২০২৪ সোমবার মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গন থেকে সকাল ৯ টায় বর্ণাঢ্য প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে এই উৎসবের সূচনা হবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় হস্তশিল্প ও হস্তশিল্পীদের উৎসাহ দিতে তাদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরেই ‘ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেলা’-র আয়োজন করা হচ্ছে। অংশগ্রহনে আগ্রহী সকলকেই কলেজে এসে যোগাযোগ করতে পারেন।
কলেজ সুত্রে জানা গেছে ইতিমধ্যেই তারা স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে বসন্ত উৎসবে অংশ নেবার বিষয়ে কথা বলা শুরু করছেন। কলেজ সংলগ্ন গ্রামের মানুষেরা ইতিমধ্যেই এই উৎসবে যোগ দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে প্রতি বছরই সকলের সহযোগিতায় এই উৎসব পালনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ