Advertisement

Responsive Advertisement

আগরতলাতে এবছর থেকে চার বছরের বিএসসি - বিএড কোর্স চালু করা হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১০ জানুয়ারি: ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) বর্তমানে ইন্টিগ্রেটেড টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম (ITEP) কোর্স চালু করেছে। রাজ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এনআইটি, আগরতলাতে এবছর থেকে চার বছরের বিএসসি - বিএড কোর্স চালু করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আরও কয়েকটি কলেজে ইন্টিগ্রেটেড টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম কোর্স এর জন্য অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। বুধবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা এই তথ্য জানান। 
                রাজ্যে ডায়েট (District Institute of Education & Training Institute) কলেজ সম্পর্কিত বিষয়ে এদিন বিধানসভায় বিধায়ক রামু দাস ও বিধায়ক বিন্দু দেবনাথের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৭টি ডায়েট কলেজ রয়েছে। নতুন করে উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগরে আরও একটি ডায়েট কলেজের নির্মাণ প্রক্রিয়ার কাজ চলছে এবং আরও শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে অর্থদপ্তর ৮টি লেকচারার, ডায়েট পদ পূরনের অনুমোদন দিয়েছে ও সেই অনুসারে পদগুলি পূরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
                      বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা জানান, ধনপুর বিধানসভার অধীন ডায়েট কলেজে ডি.এল.এড (Diploma in Elementary Education) টিচার ট্রেনিং কোর্স এর পঠনপাঠন কর্মসূচি চলতি শিক্ষাবর্ষে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এই বিষয়টি ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন - এর অনুমোদন সাপেক্ষ। তবে বর্তমানে নবনির্মিত ডায়েট ভবনটি শিক্ষাদপ্তর, এসসিইআরটি ও জেলা শিক্ষা অধিকার দপ্তর দ্বারা চাকরিরত শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের শিক্ষণ প্রশিক্ষণ বিষয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়নের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
                  বিধানসভায় এই সংক্রান্ত আরো পরিপূরক তথ্য সম্পর্কে অবহিত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে ৭টি ডায়েট কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এরমধ্যে ৪টি ডায়েটে ২ বছরের ডি.এল.এড কোর্স চালু রয়েছে এবং বর্তমানে ৪টি কলেজে সর্বমোট ৪৮০টি সিট রয়েছে। ২০২৩ - ২৫ শিক্ষাবর্ষে ডায়েট ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীর ভর্তি রয়েছে - ডায়েট, আগরতলা - ২০০জন, ডায়েট, কাকড়াবন - ১৮০জন, ডায়েট, কমলপুর - ৫০জন ও ডায়েট, কৈলাশহরে - ৫০জন। অবশিষ্ট ৩টি ডায়েট কলেজ জেলাভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষণ প্রশিক্ষণের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়নের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ডায়েট - এ ডি.এল.এড কোর্স শুরু করার জন্য ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। একটি বিজ্ঞপ্তি মূলে এনসিটিই গত ২০২১-২৩ শিক্ষাবর্ষে ডি.এল.এড কোর্স শুরু করার জন্য আবেদন করার অনুমোদন দেয়নি। পরবর্তী সময়ে এনসিটিই-এর অনুমোদন পেলে, নতুন ডায়েটগুলিতে ডি.এল.এড কোর্স শুরু করা হবে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী আরো জানান, সিপাহীজলা জেলার ধনপুর বিধানসভার অধীন বাঁশপুকুর এলাকায় একটি নতুন ডায়েট চালু হয়েছে। 

                 এদিকে, বুধবার অধিবেশনের চতুর্থ দিনে রাজ্যপালের ভাষণকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে পবিত্র বিধানসভায় বক্তব্য পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, ত্রয়োদশ ত্রিপুরা বিধানসভার তৃতীয় অধিবেশনের প্রথম দিনে মাননীয় রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডী তাঁর ভাষণে খুব সুন্দরভাবে আমাদের সরকারের সময়ে রাজ্যের উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরেছেন। এর পাশাপাশি এদিন রাজ্যবাসীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং উন্নয়নমুখী বিভিন্ন বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনায় অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। 
                 রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ডা: সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বে বিকাশের লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা। প্রধানমন্ত্রী বলছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়ন না হলে দেশের উন্নয়ন হবে না। এক্ষেত্রে ত্রিপুরাতেও এডিসি এলাকা অর্থাৎ জনজাতি এলাকার উন্নয়ন না হলে রাজ্যের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হবে না। তাই ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন। তাতেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নেও বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে এই সরকার। আগে দুটি মেডিকেল কলেজ ছিল। আর এখন আরো একটি ডেন্টাল কলেজ গড়ে তোলা হয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবায় সুপার স্পেশালিটি বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। স্টেট হাসপাতালগুলোর উপর রোগীর চাপ কমাতে জেলা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য শান্তিরবাজার, উদয়পুর, আমবাসায় ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। খুব সহসাই ধর্মনগরেও ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু করা হবে। রাজ্যের বর্তমান সরকার জনজাতি অংশের মানুষের কল্যাণেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ