কিল্লা, ২৪ নভেম্বর: রাজ্যের কুইন আনারস ইতিমধ্যে জিআই ট্যাগ পেয়েছে। এবার রাজ্যের উৎপাদিত কমলালেবু, গন্ধরাজ লেবু, উদয়পুরের ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের পেড়া এবং সিঁদল শুটকির জিআই ট্যাগ পাওয়ার জন্য কাজ চলছে। এই সব পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়া এবং এমন সামগ্রী আর কোথাও হয় না তাই জিআই ট্যাগ পাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার উদয়পুরের কিল্লায় রাজ্য ভিত্তিক কমলা উৎসবের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথাগুলো বলেন রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ত্রিপুরা রাজ্য ভিত্তিক কমলা উৎসব অনুষ্ঠিত হল। এবছর এই উৎসব হয় গোমতী জেলার কিল্লা এলাকায় মলসুম তৈবাগলাই পাড়ায়। উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সেই সঙ্গে অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের ডিরেক্টর ড. ফনিভূষণ জমাতিয়া, ত্রিপুরা কৃষি কলেজের প্রিন্সিপাল ড. টিকে মৈত্র, সমাজ সেবী রথীন্দ্র জমাতিয়া প্রমুখ।অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবের থিম স্টলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ফিতা কেটে স্টলের উদ্বোধনের পর ভেতরে রাখা বিভিন্ন আকার ও ধরণের কমলাসহ লেবু দেখেন। এর পর একে একে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের উন্নয়ন মূলক কাজ কর্মের প্রদর্শনী স্টলের উদ্বোধন করেন। স্থানীয় এলাকার চাষীরাও নিজেদের বাগানের উৎপাদিত কমলা নিয়ে বসেন বিক্রির জন্য। এই সব চাষীদের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রী জানতে চেষ্টা করেন ফলন কেমন হয়েছে ও কি পরিমান লাভ হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য থাকতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, যদি মানুষকে স্বাবলম্বী না করা যায় তবে তাদের সারা সম্পদ দিলেও কিছু হবে না। তাই বর্তমান রাজ্য সরকার মানুষদের স্বাবলম্বী করার জন্য কাজ করছে। রাজ্যে খুব ভালো মানের কমলা উৎপাদিত হয়। এক সময় জম্পুই পাহাড়ে খুব ভালো মানের কমলা চাষ হতো কিন্তু পরিচর্যার অভাবে ফলন কমে গিয়েছে। তবে কিল্লা কমলা কমলা চাষের জন্য খুব ভালো। রাজ্য সরকার কমলা চাষীদের পাশে রয়েছে। ইতিমধ্যে ২২৪জন কমলা চাষীকে ২০হাজার টাকা করে সহায়তা করা হয়েছে, মূলত যাদের বাগান পুরাতন হয়ে গিয়েছে তাদের বাগানের পরিচর্চার জন্য এই সহায়তা করা হয়। আগামী দিনেও সহায়তা করা হবে। সরকার চায় একটুকরো জমিও যেন ফাঁকা না থাকে। যাই চাষ করা হোক তাতেই সরকার সহায়তা করবে। বর্তমান সরকার নতুন করে ৯১হেক্টর জমিতে কমলা বাগান তৈরী করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫হেক্টর কিল্লা এলাকাতেই তৈরী করা হয়েছে। বিভিন্ন জাতের কমলা রয়েছে এর মধ্যে রাজ্যে খাসি ম্যান্ডারিন জাতের কমলা চাষ হয়, যা অত্যন্ত সুস্বাদু। মন্ত্রী আরও বলেন রাজ্যের আনারস ইতিমধ্যে জিআই ট্যাগ পেয়েছে। এখন রাজ্যের কমলা, কাঁঠাল, গন্ধরাজ লেবু, মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের পেড়া এবং সিঁদল শুটকির জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে। বিশেষ করে কমলাসহ লেবু জাতীয় ফলের চাষের গুরুত্ব দিয়ে লেবু জাতীয় ফসলের সেন্টার অফ এক্সিলেন্স কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এটি গড়ে তোলা হবে ভারত এবং ইজরায়েলের যৌথ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে।
রাজ্য সরকার সহায়ক দলের মাধ্যমে মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করছে। এর জন্য সরকারের তরফে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে রাজ্যের ৮৩ হাজারের বেশি দিদি লাখপতি দিদিতে পরিণত হয়েছেন বলেও জানান।
0 মন্তব্যসমূহ