Advertisement

Responsive Advertisement

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ত্রিপুরায় ২.২৮লক্ষ পরিবারকে পাকা ঘর পেয়েছেন



আগরতলা, ৮ ফেব্রুয়ারী: প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত হচ্ছে অন্ন বস্ত্র এবং বাসস্থান। মানুষের যখন অন্ন ও বস্ত্রের সংস্থান হয় তখন সে খুঁজে একটি বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখে। প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে নিজের একটি বাড়ি তৈরি করার। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে অনেকের এই স্বপ্নপূরণ করা সম্ভব হয় না আবার অনেকের অনেক কষ্ট হয় স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে। তাই ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান সরকার মানুষের এই স্বপ্ন পূরণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে রাজ্যের বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারের মাথার উপর একটি ছাদের সংস্থান করে দেওয়ার কাজে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে ত্রিপুরা রাজ্যে ২ লাখ ২৮ হাজার পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি তৈরি করে দেওয়ার জন্য সরকার ২ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে পূর্ব প্রথম সরকার যেখানে গড়ে দৈনিক ৫টি গড় নির্মাণ করে দিত সেখানে বর্তমান সরকার এর চেয়ে অনেক গুণ বৃদ্ধি করে গড়ে দৈনিক ২৮ টি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে। নির্মাণের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র সরকারের সদিচ্ছা এবং জনগণের প্রকৃত কল্যাণে কাজ করার মানসিকতার জন্য। সরকার শুধু তাদেরকে ঘর তৈরি করে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকেনি। এর পাশাপাশি ঘর প্রাপকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বাড়িতে বিদ্যুৎ, পানীয় জল, রান্নার গ্যাসের সংযোগ এবং শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। 
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-শহর প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করার জন্য সর্বভারতীয়স্তরে পুরস্কৃত হয়েছে ত্রিপুরা। গুজরাটের রাজকোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরার নগর উন্নয়ন দফতরের সচিব কিরণ গিত্যের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, রাজ্যের ২০টি পুর এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাসন যোজনা-শহর প্রকল্পে ছয়টি ডিপিআর অনুসারে মোট ৮৭,২২৬টি বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৭০,৬৪০টি বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫৩,৩০২টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৩৩,৯২৪টি বাড়ি নির্মাণের কাজ ৩১ মার্চ, ২০২৩ এর মধ্যে শেষ হবে।
ত্রিপুরার ৭৫ শতাংশ গৃহ আধা স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রেণীর যার মধ্যে ৮৩ শতাংশই হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়৷ রাজ্যে ৭৫ শতাংশ আবাসনই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল পাঁচ নং ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্ণিত হওয়ার কারণে গ্রামীণ এলাকার কাঁচা মাটির ঘরে বসবাসকারী লোকদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে৷ বৃষ্টিপাতের হার বেশি হওয়ায় ত্রিপুরাতে মাটির কিংবা বাশের ঘরে জি সি আই সীটের চাল তৈরি করতে বেশি দেখা যায়৷ কিন্তু ভারত সরকারের নিয়মে জি সি আই সীট-র তৈরি গৃহকে পাকাবাড়ি হিসেবে বিবেচনা করা হত বলে ত্রিপুরার বহু দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেত না৷ তাই ত্রিপুরা সরকার ২০১৮ সালে জি সি আই সীট দেওয়া কাঁচা বাড়িগুলিকে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য এবং পাহাড়ি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে পি এম এ ওয়াই জি প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে৷ সেই অনুসারে ভারত সরকার প্রচলিত নিয়মের সংশোধন করে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে জি সি আই সীট দেওয়া ঘরগুলিকেও কাঁচা বাড়ির মর্যাদা দেয়৷ ফলে ত্রিপুরাতে ২০১১-এর সমীক্ষার তুলনায় আরও ২,৮০,৪১৯ জন বেশি যোগ্য সুবিধাভোগীকে চিহ্ণিত করা হয় যা রাজ্যের ক্ষেত্রে এক বড় সাফল্য৷ আগের তালিকার ৪৮,৫০০ জন সুবিধাভোগীর নাম ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে৷

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ