সুদীপ নাথ, আগরতলা, ১৪ সেপ্টেম্বর: গ্রামীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা যে ধারাবাহিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তা আজ রাজ্যের হাজার হাজার মানুষের কাছে আশার আলো হয়ে উঠেছে। শহর ও গ্রাম—এই বৈষম্য দূর করে প্রতিটি মানুষ যাতে প্রাথমিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবার সুবিধা পায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য মিশন এগিয়ে চলছে।
নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বহু মানুষ এখনও সময়মতো চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এই সমস্যার সমাধান করতে মুখ্যমন্ত্রী নতুন নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব কেন্দ্র শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা নয়, উন্নত মানের আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবাও দেবে। এর ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষকে আর শহরে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না।
আয়ুষ্মান মন্দির—এক অনন্য পদক্ষেপ
স্বাস্থ্যসেবার বিকেন্দ্রীকরণে আয়ুষ্মান মন্দির প্রকল্প বিশেষ ভূমিকা রাখছে। গ্রামীণ এলাকায় এই কেন্দ্রগুলো রোগীদের জন্য বিনামূল্যে অথবা স্বল্প খরচে চিকিৎসা নিশ্চিত করছে। শুধু চিকিৎসকই নয়, প্রয়োজনীয় ওষুধ, ল্যাব পরীক্ষার সুবিধা এবং প্রাথমিক পরামর্শ সবকিছুই থাকছে এই কেন্দ্রগুলোতে। ফলে, গ্রামীণ মানুষ ঘরের কাছেই পাচ্ছেন মানসম্মত স্বাস্থ্য পরিষেবা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত করতে তার পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদি। আরও আধুনিক প্রযুক্তি গ্রামে পৌঁছে দেওয়া, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, টেলিমেডিসিন পরিষেবার সম্প্রসারণ এবং নারী-শিশু স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়াই হবে আগামী দিনের মূল লক্ষ্য।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় রাজ্যবাসী দেখছে এক নতুন দিক। যেখানে গ্রামীণ মানুষ অসুস্থ হলে অসহায়তার চাপে পড়ে যেতেন, সেখানে এখন দ্রুত চিকিৎসা ও সহযোগিতা পাচ্ছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিষেবার মানও উন্নত হওয়ায় গ্রামীণ মানুষ নতুন আস্থা অর্জন করছে।
ত্রিপুরার গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহার পথপ্রদর্শক কয়েকটি উদ্যোগ রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার খালি রাখায় মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ডঃ মানিক সাহার নেতৃত্বে কিছু সুস্পষ্ট ও প্রগতিশীল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তার লক্ষ্য—গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় উন্নত ও কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া।
কঞ্চনবাড়িতে নির্মিত প্রাইমারি হেলথ সেন্টার ও আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির ভবন উদ্বোধন করা হয়, যার নির্মাণ ব্যয় আনুমানিক ৪.৫ কোটি।
সিপাহিজালা জেলায় সাতটি আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির ভবনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করা হয়, যা স্বাস্থ্যসেবায় আরও বহুবিধ অ্যাক্সেস নিশ্চিত করবে।
ধলাই জেলার কামালপুরে নাইকাশিপাড়া গড়ে উঠেছে আরও একটি আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী আশা কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মুঙ্গিকামি) পি এইচ সি তে ব্লক পাবলিক হেলথ ইউনাইটেড নির্মাণে ২.৬৪ কোটি ব্যয় করা হয়েছে, যা জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ও ১৫তম অর্থ কমিশনের গ্রান্টের আওতায় সম্পন্ন করা হয়। চিফ মিনিস্টার জন আরোগ্য যোজানা ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ চালু হয়। এটি প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য বীমার আওতায় না আসা প্রায় ৪.১৫ লাখ পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করে, যেখানে প্রতি পরিবার পাবেন নগদ-নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসার সুবিধা হয়ে বছরে ৫ লাখ পর্যন্ত।
এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে প্রায় ১,৭৯,৩৫০ পরিবারের ৩,৯৮,৯৭৫ জন সদস্যের কার্ড তৈরি হয়েছে, এবং ৪,০৬২ জন রোগী ইতোমধ্যে ৫.০৫ কোটি টাকার চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন। অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উন্নয়নমূলক উদ্যোগত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে আই সি ইউ কমপ্লেক্স, ই এন টি ওট, রেটিনা সার্জারির সুবিধা, ট্রমা সেন্টার, স্কিল ল্যাব ও ডায়ালিসিস ইউনিট—এসবের উদ্বোধন ও উন্নয়ন ঘটেছে।
সরকার আরও ২০২৫ সালে ৪৩২ জন নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়—যার মধ্যে ৩৩২ জন স্থায়ী এবং ১০০ জন চুক্তি ভিত্তিক
এছাড়া, ন্যান্সিং শিক্ষায় আন্তর্জাতিক সুযোগ জাপানে পাঠানো হয়েছে।
সাধারণ জনসাধারণের জন্য ফ্রি আইচেক-আপ ক্যাম্প এবং আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। শিশুর হার্ট সার্জারি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্পের মাধ্যমে সমাজমুখী উদ্যোগ।
0 মন্তব্যসমূহ