Advertisement

Responsive Advertisement

গুরু পূর্ণিমায় আত্মিক বন্ধনের উষ্ণ ছোঁয়া: প্রিয় শিক্ষকের হাত ধরে শৈশবে ফিরে গেলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ


আগরতলা, ১১জুলাই: গুরু পূর্ণিমা একটি এমন দিন, যেদিন শিষ্য মাথা নোয়ায় তাঁর গুরুর সামনে, কৃতজ্ঞতার নিঃশব্দ ভাষায়। সেই পবিত্র দিনেই মোহনপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আঙিনা সাক্ষী রইল এক অনন্য দৃশ্যের, যেখানে ত্রিপুরার বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ ফিরে গেলেন তাঁর শিকড়ে প্রিয় শিক্ষক নিতাই আচার্যের হাত ধরে, ফিরে গেলেন সেই শৈশবের পাঠশালায়।
এক অদ্ভুত নৈঃশব্দ্যে ভরা আবেগঘন মুহূর্তে, স্কুলের পরিচিত মাঠে পা রাখলেন মন্ত্রী, সঙ্গে প্রিয় শিক্ষক। একসাথে মঞ্চে বসে তাঁরা ভাগ করে নিলেন পুরনো দিনের স্মৃতি, আর গড়ে তুললেন এক নতুন প্রজন্মের সঙ্গে গুরু-শিষ্য সম্পর্কের সেতুবন্ধন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগতাড়িত বিদ্যুৎ মন্ত্রী বললেন গতকাল আমি স্যারের বাড়ি গিয়েছিলাম। স্যার আর স্যারের স্ত্রীকে প্রণাম জানিয়ে বললাম আপনি কি এখনও সেই স্কুলটা মনে রাখতে পারেন? চলুন, আবার একবার সেখানে ফিরে যাই। আজকের দিনে সেই স্কুলে আপনার সঙ্গে যেতে পারাটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।
ছাত্রদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন শুধু ‘প্রণাম’ বলতাম না শিক্ষকদের পায়ে হাত দিয়ে আশীর্বাদ নিতাম। আজকের প্রজন্ম অনেক সৌভাগ্যবান, তারা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও ভালো শিক্ষার পরিবেশ পাচ্ছে। তবে স্মরণ রাখতে হবে আমাদের জীবনে শিক্ষকদের অবদান অপরিসীম। তাঁরা শুধুই শিক্ষক নন, প্রকৃত অর্থে জীবনের দিকনির্দেশক, মাতা-পিতার পরেই যাঁদের স্থান।
শিক্ষক নিতাই আচার্যের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, মোহনপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ই ছিল তাঁর প্রথম কর্মস্থল। পরে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বড়জং স্কুল, শিশুবিহার স্কুল সহ রাজ্যের বহু নামী প্রতিষ্ঠানে।
মন্ত্রী বলেন স্যারকে আজ এখানে নিয়ে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এটা আমার জীবনের এক স্মরণীয় মুহূর্ত।
তিনি আরও বলেন আজ আমি যেটুকু হয়েছি, তার পেছনে আমার শিক্ষকদের অবদান অসীম। তারা আমাদের প্রকৃত গুরু, বাবা-মায়ের পাশাপাশি। তাই প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর উচিত তাঁদের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা রাখা।
অন্যদিকে, শিক্ষক নিতাই আচার্যও হারিয়ে গেলেন স্মৃতির সরণিতে। জানালেন, মোহনপুর উচ্চ মাধ্যমিক এক সময় বাঁশের বেড়া আর টিনের ছাউনি ছিল আমাদের স্কুলে,আর আজ এই পাকা ভবন, উন্নত পরিকাঠামো দেখে মন ভরে উঠছে গর্বে।
গুরু ও শিষ্যের এই মিলন যেন শুধু এক ব্যক্তিগত আবেগ নয়—বরং তা হয়ে উঠল এক অনন্য বার্তা, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় গুরু পূর্ণিমার প্রকৃত তাৎপর্য—কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নির্ভেজাল উৎসব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ