Advertisement

Responsive Advertisement

মান্দাই গণহত্যা কাল দিবস উদযাপন করলো আমরা বাঙালি

আগরতলা, ৬ জুন : প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বৃহস্পতিবার শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ে ১৯৮০ সালের ৬ জুনের দাঙ্গার দিনটিকে কাল দিবস হিসেবে পালন করা হয় রাজ্য কার্যালয়ে। প্রতি বছর এই দিনটিতে দাঙ্গায় নিহত স্বজন হারানোদের প্রতি শ্রদ্ধানজলী জ্ঞাপন করা হয়। শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল, প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ,অশোক দাস ও অন্যান্য নেতৃত্ব।রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল বলেন আশি সালের ৬ ই জুন টি এন ভি নামক ঘাতক বাহিনী নিরীহ বাঙালীদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ এনে লাখ লাখ বাঙালী কে হত্যা করে।আশি জুনের দাঙ্গা রাজ্যের জাতি জনজাতির মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে চিরদিনের মতো ফাটল ধরিয়ে দেয়।আশি সালের গণহত্যা বাঙালী নিধন দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীকালে বাঙালীরাও বাচার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। যার ফলে ত্রিপুরা রাজ্যে এক ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু দাঙ্গার পরবর্তী সময়ে আমরা বাঙালী দল এই দাঙ্গার মূল ষড়যন্ত্রী কারীদের চিহ্নিত করার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে আসছে। অথচ আশি সালের দাঙ্গার তদন্ত করবে দূরের কথা বরং তৎকালীন বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তী সাংবাদিক দের মুখোমুখি হয়ে বলেন আমি যদি উপজাতির ঘরে জন্ম নিতাম আমি ও উগ্ৰপন্থী হতাম। এর থেকে একটি জিনিস অনুমান এই দাঙ্গার পেছনে কাদের হাত ছিল। বাম আমলে তো তদন্ত হয়নি তাই সরকার পরিবর্তনের ফলে ভেবেছিলাম নূতন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে ও আমরা দাবি জানিয়ে আসছি আশি সালের দাঙ্গার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করা। শুধু তাই নয় আশি সালের দাঙ্গায় যে সমস্ত বাঙালী পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের অধিকাংশই এখনও ভূমিহীন অবস্থায় আছে তাদের সরকারি সাহায্য দানের ব্যবস্থা করা। আশি সালের দাঙ্গার পর আবার জোট সরকারের পর আবার রাজ্যে বাম সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক বছরের মধ্যে আবার রাজ্যে শুরু হয় নিরীহ বাঙ্গালীদের খুন অপহরণ বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ । আশি সালের দাঙ্গার পর বাঙালীরা সরকারি সাহায্য ছাড়াই বাচার ব্যবস্থা করে ও বাচতে পারেনি। কেননা দুই হাজার সাল নাগাদ রাজ্যে উগ্ৰপন্থী তৎপরতার ফলে জায়গায় জায়গায় হামলার পর অনেক লোক মারা যায়। অনেকে অপহরণ হবার পর লক্ষ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও ফিরে আসতে পারে নি। শেষ পর্যন্ত টাকারজলা, গাবরদী,লক্ষী বিল, খাস কল্যাণ পুর থেকে শুরু করে এডিসির প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাঙালীরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেন। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো যারা বাঙালীদের উপর আক্রমণ করলো কোন অপরাধীকে সরকার আইনী সাজা দেয়নি। বরং তাদের কে আত্মসমর্পণের নাটক রচনা করে তাদের কে সরকারি চাকরি, আর্থিক সহায়তা, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করে। অথচ একজন খুনি সাজা পেলো না। আবার আমরা লক্ষ্য করেছি রাজ্যে গেরুয়া সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর দশদার সন্নিহিত অঞ্চল আনন্দবাজার এলাকায় বহি রাজ্যের ব্রু শরণার্থীরা সেই সমস্ত এলাকার বাঙালীদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ এনে তাদের উচ্ছেদ করলে সরকার ব্রু শরণার্থীদের জন্য সরকারি সাহায্য দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। অথচ যে সকল বাঙালী পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো তাদের ভাগ্যে কিছুই জূটেনি। তাই আমরা লক্ষ্য করছি বাঙালী ভোট দিয়ে সরকার গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও বাঙালীর বিপদে লাল সাদা গেরুয়া কোন সরকার এগিয়ে আসেনি। তাই বাঙালীকে বাচতে হলে ঐক্যবদ্ধ ছাড়া উপায় নেই। বর্তমান লোকসভা নির্বাচনে শেষ হতেই দেখতে পাচ্ছি উত্তর ত্রিপুরার পেকুয়া ছড়ার বাঙালী দের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অপরদিকে পাশের রাজ্য অসমেও তিন শতাধিক বাঙালী পরিবারের জীবনে নেমে এসেছে ঘন অন্ধকার। তাই রাজ্যের শুভবুদ্ধি জনগণের কাছে অনুরোধ জাতির এই দুর্দিনে এগিয়ে আসুন এই আহব্বান রাখা হয় দলের পক্ষ থেকে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ