Advertisement

Responsive Advertisement

দুর্নীতি ও দুঃশাসন ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা, ২১ মে: তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। বিরোধীদের লক্ষ্য বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে গরীব রাখা। সেটা তৃণমূল হোক, কংগ্রেস বা সিপিএম। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সকল অংশের মানুষের উন্নয়ন করা। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ও সহযোগী দলগুলি চারশোর অধিক আসন নিয়ে জয়যুক্ত হবে। 
                          সোমবার পশ্চিমবঙ্গের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থী ডঃ হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে আয়োজিত জনসমাবেশে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এদিন দুর্নীতি, দুঃশাসন সহ বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। 
                            ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে অন্যতম তারকা প্রচারক ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। দিল্লির হাই কমান্ডের নির্দেশে ইতিমধ্যে পশ্চিমবাংলায় কয়েক দফা প্রচারে অংশগ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই অংশ হিসেবে গত রবিবার থেকে ফের একবার বাংলায় দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে সামিল হয়েছেন তিনি। মঙ্গলবারও ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের ভাজপা মনোনীত প্রার্থী ডঃ হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে দীর্ঘ রোড শোয়ে বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করেন ডাঃ সাহা। পরে একটি নির্বাচনী জনসভায় জনতাকে সম্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। 
                         সমাবেশে ডাঃ সাহা বলেন, আমরা জানি এটা ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। এই নির্বাচন নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার জন্য নির্বাচন। আমরা দুর্বল প্রধানমন্ত্রী চায় না। যেভাবে ইন্ডি জোট হয়েছে তর্কের খাতিরে বা স্বপ্নেও আমরা যদি ভাবি যে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তবে ৫ বছরে ৫ জন প্রধানমন্ত্রী হবেন। কারণ কে প্রধানমন্ত্রী হবেন এখন পর্যন্ত তারা ঘোষণা করতে পারে নি। আমরা পশ্চিমবাংলায় দেখলাম এই ইন্ডি জোটের কোন অস্তিত্ব নেই। কেরালাতেও ইন্ডি জোটের অস্তিত্ব নেই। তবে এটা কি ধরনের জোট? মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এই ইন্ডি জোট করা হয়েছে। আমি প্রায়শই বলি শোলে সিনেমার কথা। সেখানে অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র জেলার আসরানিকে জেলে পিস্তল আসার খবর দেন। এরপর জেলার সেন্ত্রীদের নিয়ে পিস্তল খুঁজতে গিয়ে ডানে বামে সকলকে পাঠিয়ে নিজের সঙ্গে কিছু আসতে বলেন। কিন্তু দেখা যায় তার সাথে কেউ ছিল না। ইন্ডি জোটের অবস্থাও এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। অদ্ভুত এক অবস্থা চলছে। 
                             সমাবেশে সম্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের রক্ষা করতে পারেন। তিনি বলেন, আমি আসার সময় শুনলাম এখানে প্রচুর সংখ্যায় সংখ্যালঘু অংশের মানুষ বসবাস করেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আপনাদের অবগতির জন্য জানাতে চাই কিছুদিন আগে ত্রিপুরায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সিপাহীজলা বলে একটা জেলার বক্সনগর ও ধনপুরে উপনির্বাচন হয়েছে। এই বক্সনগরে ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। সেখানে কি হয়েছে এই বক্সনগর সিপিএমের ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। এক দুবার কংগ্রেস জিতলেও বাকি সময় সিপিএমের দখলে ছিল। এজন্য উপনির্বাচনকে ঘিরে আমি নিজেই প্রতিদিন সেখানে গিয়েছি। ধনপুরে আমরা জিতেছিলাম মাত্র সাড়ে ৩ হাজার ভোটে। ত্রিপুরা ছোট জায়গা। এক একটা বিধানসভা এলাকায় ৩৭/৩৮ হাজার ভোটার থাকে। সেখানে আমি মসজিদের ইমাম সহ সকল অংশের মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। শুধু বলেছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস, সবকা বিশ্বাসের কথা বলেন। আর এই উপনির্বাচনে আমরা শুধু বিজয়ী হয় নি তাদের প্রার্থীদের জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করে দিয়েছি। মানুষ শুধু আস্থা চায়, বিশ্বাস চায়। আর এই বিশ্বাস কে দিতে পারেন? একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেটা দিতে পারেন। 
                               ডাঃ সাহা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরো বলেন, বিরোধী দল বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কেন ওরা এই বিভেদ, বিভাজন করছে? আসলে তারা ঘোলা জলে মাছ ধরতে চায়। তারা মানুষকে গরীব রাখতে চায়। সেটা তৃণমূল হোক, কংগ্রেস হোক বা সিপিএম। আর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলছেন সবার উন্নতি আমরা চায়। তিনি সকলের জন্য উন্নয়নের গ্যারান্টি দিচ্ছেন। আর সেই গ্যারান্টিরও গ্যারান্টি দিচ্ছেন। অর্থাৎ আমি যে কাজটা করবো সেটা যাতে সময়ের মধ্যে শেষ হয়। প্রধানমন্ত্রী কখনো কারোর সাথে বিমাতৃসুলভ আচরণ করেন না। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশ ক্রমশ বিকাশের লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলছে। এর ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও। এই রাজ্যের উন্নয়নে তিনি সর্বদাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ এখানের সরকার বলছে অন্য কথা। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়নে খুবই আন্তরিক প্রধানমন্ত্রী। আর এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীরা আশানুরূপ ফলে জয়ী হবেন। মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিশ্বাস করে। ভারতীয় জনতা পার্টির উপর আস্থা রয়েছে মানুষের। 
                          জনসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য ও মন্ডল স্তরের শীর্ষ নেতৃত্ব। এই সভাকে ঘিরে ভাজপার হাজার হাজার কর্মী সমর্থক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ