Advertisement

Responsive Advertisement

সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে

                                     ড. হৈমন্তী ভট্টাচার্জী

হিন্দুধর্মে, সংসার হল আত্মার ভ্রমণ।
হিন্দুরা বিশ্বাস করে যে "পুণ্যময় জীবন" ও "ধর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্ম" ভাল ভবিষ্যতের অবদান রাখে, তা এই জীবনে হোক বা ভবিষ্যতে।
পরিবারের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটা শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন যাপন হলো সংসার। 
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’...এই কথাটি আমাদের সমাজে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু একটি সংসার বাঁচিয়ে রাখার জন্যে বা পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় রাখার জন্যে শুধুই কি এক মহিলারই ভূমিকা থাকে?
সেই বাড়ির পুরুষ সদস্যের কি কোনও ভূমিকা থাকে না? বর্তমান প্রজন্ম কিন্তু ঠিক সেভাবে ভাবে না। আসলে সংসার ভালো রাখার জন্য ও সেখানে সুখ-শান্তি বজায় রাখতে দুজনের ভূমিকাই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

সংসারে দুজন মানুষের সমান ভূমিকা এবং সমান গুরুত্ব থাকা উচিত। একজন ভালো স্ত্রীর যেমন প্রয়োজন, তেমনি একজন ভালো স্বামীরও কিন্তু ভূমিকা অনেক।

 একজন মহিলা তাঁর স্বামীর মধ্যে যে পাঁচটি গুণ দেখতে চান, বা যে পাঁচটি বিষয় স্বামীর মধ্যে দেখলে মনে হয় তাঁদের জীবনে সুখের কোনও ঘাটতি হবে না সেগুলো হলো

১. স্ত্রীর কথা মন দিয়ে শোনা

সব মহিলাই চান, তাঁর স্বামী যেন একজন ভালো শ্রোতা হন। স্ত্রীর কথা না শুনলে বা গুরুত্ব না দিলে কিন্তু আপনার প্রতি ধীরে ধীরে তিনি বিরক্ত হয়ে উঠবেন ।
আপনার প্রতি আশাও কমে আসবে। বরং, এরপর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হবে। তাই স্ত্রীর কথা অবশ্যই মন দিয়ে শুনুন। তারপর নিজের মতামত জানান। কথা শোনা আর কথা মেনে চলার মধ্যে ও পার্থক্য আছে, তা ভুললে চলবে না।

২.সংসারের দায়িত্ব ভাগ করে নিন

কোনও পরিবার এবং সংসারের সুখ-শান্তির দায়িত্ব কিন্তু প্রত্যেকের। সেই বিষয়ে আপনাকেই ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। আপনার স্ত্রী যেমন সংসারের কাজ করবেন, একইভাবে আপনাকেও কিন্তু সেই দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে।
আপনারা দুজনেই যদি চাকুরিজীবী হন, তবে এটি আরও বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে। তিনি যদি রান্না করেন, তাহলে আপনি সবজি কেটে গুছিয়ে দিন। এভাবেই কাজ ভাগ করে নিতে হবে।

৩. স্ত্রী’কে ভালো বন্ধু মনে করা

একজন মহিলার কিন্তু এই আকাঙ্খা মনে সব সময় থাকে। তিনি স্বামীকে বন্ধু হিসেবে পেতে চান। আসলে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে দুজনের অধিকার সমান হয়। দুজনেই দুজনকে সম্মান করেন।
স্বামী যদি বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে নিশ্চিন্তে সব মনের কথা বলা যায়। কোনও অসুবিধায় পড়তে হয় না। কোনও কাজ করার আগে দশবার ভাবতে হয় না। বরং, দুজনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব দায়িত্ব নিতে পারেন, একইভাবে মনের কথা খুলে বলতেও দুবার ভাবতে হয় না।
হাতটি ছাড়বেন না
একটি পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় রাখার জন্যে এবং সাংসারিক ঝগড়া এড়িয়ে যাওয়ার জন্যে একে অপরকে সম্মান করা প্রয়োজন। দাম্পত্যে সম্মান ও শ্রদ্ধা কিন্তু ভিতের মতো হয়ে ওঠে।
আপনাদের সম্পর্কের এই দুটি দিক যদি মজবুত হয়, তবে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। তাই স্ত্রীকে, স্ত্রীর মতামতকে সম্মান করুন। তিনি আপনার থেকে এইটুকুই আশা করেন। দুজনে খুব ভালো থাকুন। সংসার সুখের হোক দুজনের গুণেই।

৪.স্ত্রীকে সমর্থন করা
আপনার সঙ্গে স্ত্রীর সমস্যা হতেই পারে। তাঁর কোনও জিনিস আপনার অপছন্দ হতেই পারে। মতামতেরও পার্থক্য হতে পারে। কিন্তু তাঁকে সেইসব কথা ব্যক্তিগত ভাবে জানান। আপনাদের অন্য ব্যক্তিগত মুহূর্তও যেমন থাকবে, একইভাবে ঝগড়াও করবেন ব্যক্তিগত ভাবে।

৫.সবার সামনে স্ত্রীর উপর চিৎকার না করা

সবার সামনে স্ত্রীকে কখনোই অপমান করবেন না। সবসময় মনে রাখবেন, আপনি এবং আপনার স্ত্রী একটি টিম। তাই তাঁর প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া আপনার কর্তব্য। অন্য কারও সামনে স্ত্রীকে সমর্থন করুন। ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে খারাপ লাগার কথা জানান।
সবশেষে একটা কথাই বলতে পারি 
সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে,গুণবান পতি যদি মিলে তার সনে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ