আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি: মানুষের কাছে মৌলিক অধিকারগুলি পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। সমাজের অন্তিম ব্যক্তির কাছে সরকারি জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যেই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান শুরু হয়েছে। তাছাড়াও এই দুই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। বুধবার বিকেলে আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ২ দিনব্যাপী পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা এবং প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুশাসনের আসল উদ্দেশ্যই হচ্ছে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা সমূহকে যথাযথভাবে রূপায়নের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্ন ছিল এদেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূলীকরণ। এই দিশাকে পাথেয় করে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ 'জনজাতি গৌরব দিবস'-এর দিন সারা দেশজুড়ে শুরু করেছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকারও সেই দিশায় ২০২২ সালে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান শুরু করেছিল। এই অভিযানের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবায় উপকৃত হয়েছিলেন রাজ্যের প্রায় ২৩ লক্ষাধিক জনগণ। প্রথম পর্যায়ের সাফল্যের নিরিখে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ অভিযান শুরু করা হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ জনজাতি গৌরব দিবস থেকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রায় সরকার জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণকে স্যানিটেশন সুবিধা, আবশ্যক আর্থিক পরিষেবা, এলপিজি সংযোগ, খাদ্য নিরাপত্তা, সঠিক পুষ্টি প্রদান, নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান, গুণগত শিক্ষা ইত্যাদি মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানে নিরন্তর কাজ করে চলছে। এছাড়াও এই কর্মসূচিতে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে রয়েছে বিশেষ প্রকল্প যেমন, সিকেল সেল অ্যানিমিয়া দূরীকরণ অভিযান, একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল তালিকাভুক্তকরণ, স্কলারশিপ স্কিম, বনকে ভিত্তি করে বিভিন্ন স্বসহায়ক গোষ্ঠী গঠন ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে বর্তমান সরকার স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে চলছে। এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল, জনগণকে এই সরকারের কাছে আসতে হবে না, সরকার জনগণের কাছে পৌঁছবে। মুখ্যমন্ত্রী ২ দিন ব্যাপী এই মেলার সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. বিশাল কুমার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, বিধায়ক মীণা রানী সরকার, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, আগরতলা পুরনিগমের অতিরিক্ত কমিশনার সাজাদ পি, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও সমাহর্তা প্রশান্ত বাদল নেগি প্রমুখ। উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মরত আধিকারিক এবং কর্মীদের সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে পুরস্কৃত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ও উপস্থিত অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার স্বরূপ শংসাপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানে শেষে মুখ্যমন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।
0 মন্তব্যসমূহ