Advertisement

Responsive Advertisement

বিরোধী দলনেতার আনা কুৎসার জবাব দিলেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস

আগরতলা ১৬ অক্টোবর : রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সুধাংশু দাস, তার দাদা এবং বৃদ্ধ মায়ের নামে দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরী বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। বিরোধী দলনেতার আনা এই অভিযোগের জবাব দিলেন মন্ত্রী নিজে, সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতার আনা অভিযোগের প্রমাণ প্রকাশ্যে পেশ করার দাবি জানান মন্ত্রী অন্যতায় বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আদালতের কড়া নাড়ার কথা জানিয়ে দিলেন মন্ত্রী নিজে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগরতলা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন দেখে বিরোধী দলনেতার কুৎসার জবাব দেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস।
সম্প্রতি বিরোধী বাম শিবিরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ছোট্ট কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপিং প্রচার করা হয় সেই সঙ্গে বিরোধী দলের তরফের দাবি করা হয় যে মন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন যে বিভিন্ন ঠিকাদারদের কাছ থেকে নানা সময় অর্থ সংগ্রহ করে থাকেন। এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরী একাধিক জায়গায় দাবি করেন মন্ত্রীর বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকেন। 
 বিরোধী দলনেতার এই দাবির প্রেক্ষিতে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, গত দুই মাস ধরে একটি ওয়েব মিডিয়া থেকে তাকে ফোন করে ইন্টারভিউর জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছিল। তাদের দীর্ঘদিনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তিনি ইন্টারভিউ দিতে রাজি হন এবং দীর্ঘ ইন্টারভিউ শেষে ওই সংবাদ মাধ্যমের তরফে ব্যক্তিগত স্তরে আলোচনার সময় তাকে অনুরোধ জানানো হয় বছরে ৫-৬ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য, বিনিময়ে তারা মন্ত্রীর খবর প্রতিদিন প্রকাশ করবেন বলেও জানান। তাদের এই কথার প্রেক্ষিতে তিনি বলেছিলেন যে দপ্তর থেকে এতগুলো টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষ সহায়তার জন্য আসেন তখন তিনি তার সাধ্যমত সাধারণ মানুষদের সহায়তা করেন পাশাপাশি অন্যান্যদের কেউ সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্তরের এই কথাবার্তা গুলি সংবাদ মাধ্যমের তরফে লুকিয়ে রেকর্ড করা হয় এবং পরবর্তী সময় সম্পূর্ণ কথাবার্তা কেটে মাত্র কয়েক সেকেন্ড কথাবার্তাকে কিছুটা বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বিরোধী বাম দলের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিন মন্ত্রী দাবি করেন ব্যক্তিগত স্তরে যে কথাবার্তা বলা হয়েছে তার সম্পূর্ণটা যেন প্রকাশ করা হয় তাহলে বাস্তব সত্য বেরিয়ে আসবে আসলে তিনি কি বলেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করার জন্য নিন্দা জানার এবং তার ব্যক্তিগত চরিত্র হননের চেষ্টা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 
পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মন্ত্রী আরো বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তিনি লক্ষ্য করছেন বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরী তিনি এবং তার পরিবার সম্পর্কে প্রকাশ্যে কুরুচি করমন্তব্য করছেন। বিরোধী দলনেতা বলার চেষ্টা করছেন যে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তার সম্পত্তির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার পরিবার রাজ্যের সর্বোচ্চ কর দাতা হিসেবে উঠে এসেছে। এর জবাবে তিনি বলেন, তৎকালীন বাম জমানা ২০১৪ সাল থেকে তিনি ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে আসছেন। তখন তিনি একটি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন, ২০১৭ সালে তিনি বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে দেন ও বিজেপিতে যোগদান করেছেন বামেদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে। তখন তিনি প্রায় আশি হাজার টাকা প্রতিমাসে আয় করতেন। চাকরির সূত্রে তিনি সংস্থার হয়ে তিনটি দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু জিতেন বাবু প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমে এসে মন্ত্রীর মা সম্পর্কে নানা কথাবার্তা বলছেন বলেও জানান। মন্ত্রী আরো বলেন জিতেন চৌধুরীর সঙ্গে তার রাজনৈতিক মতাদর্শগতিরোধ রয়েছে তবে পারিবারিক বা সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নেই, তারপরও জিতেন বাবু প্রতিনিয়ত পরিবার নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছেন। বিরুদ্ধে দলনেতা প্রায় প্রতিদিনই বলেন যে মন্ত্রী সুধাংশু চৌধুরীর মা বিপিএল পরিবারভুক্ত ছিলেন। মন্ত্রী এ দিন প্রশ্ন করেন রাজ্যে যারা বিপিএল পরিবারভুক্ত রয়েছেন তারা কি সারা জীবন বিপিএল এই থাকেন এটা তিনি চান? বিপিএল পরিবারভুক্ত মানুষগুলির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হোক এটা কি জিতেন বাবু চান না, দেশ এবং রাজ্যে বহু বর্তমানে ধনী ব্যক্তি রয়েছেন তাদের অনেক দরিদ্রতার মধ্যে কেটেছিল বলেও জানান তিনি। জিতেন বাবু আরো বলেন, মন্ত্রী সুধাংশু দাসের ভাই বর্তমান রাজ্যের সর্বোচ্চ আয়কর দাতা। এই বিষয়টি তিনি তিনি প্রমাণ করে দেখান, জিতেন বাবু এই প্রমাণ দিতে পারলে মন্ত্রী তার পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও জানান। যদি জিতেন বাবু প্রমাণ না দিতে পারেন তাহলে প্রকাশ্যে যেন নিঃস্বার্থ ক্ষমা চান। জিতেন বাবুকে প্রমাণ দেওয়ার জন্য মন্ত্রী এদিন থেকে আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। যদি এই সময়ের মধ্যে জিতেন বাবু প্রমাণ না দিতে পারেন বা ক্ষমা না চান তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী এ দিন। সেইসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন জিতেন চৌধুরীর বাম দলের নেতা চন্ডীচরণ ত্রিপুরা খুঁদ জিতেন চৌধুরী সম্পর্কে আর্থিক তছরুপের এর অভিযোগ তুলেছিলেন। জিতেন চৌধুরী মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে ২৬ কোটি টাকা আর দিক কেলেঙ্কারি করেছিলেন বলেও বাম দলের অভিনেতা দাবি করেছিলেন। পাশাপাশি জিতেন্দ্র চৌধুরীকে মন্ত্রী প্রশ্ন করেন, জিতেন বাবু যখন মন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি আগরতলা শহরে বাড়ি তৈরি করেছিলেন এই টাকার উৎস কি? জিতেন বাবু যতগুলি দপ্তরে ছিলেন প্রায় সব কটি দপ্তরেজিতেন বাবু যতগুলি দপ্তরে ছিলেন প্রায় সব কটি দপ্তরে আর্থিক দুর্নীতি করেছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ