Advertisement

Responsive Advertisement

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২০ ফেব্রুয়ারি: সড়ক সুরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আইন পরিবর্তন করেছেন তিনি। দুর্ঘটনা রোধ করতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। সকলকে আরো সচেতন হতে হবে। অতিরিক্ত গতির কারনে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একমাত্র সচেতনতার মাধ্যমে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। 
                 মঙ্গলবার রাজ্য পরিবহন দপ্তরের উদ্যোগে আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে আয়োজিত জাতীয় সড়ক সুরক্ষা মাস - ২০২৪ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
                      অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, গত বছর সারা দেশে শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লক্ষ ৬৮ হাজার মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এসকল ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো চার লক্ষের অধিক মানুষ। বিশেষ করে কম বয়সী ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরাই অধিকাংশ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে শুধু তারা সমস্যায় পড়ছে না তাদের পরিবারও নানাভাবে সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি এতে জিডিপির ৩.১৪ শতাংশ আর্থ সামাজিক ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা নীতি মোটর যান আইন ২০২০ তে পরিবর্তন এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে আরক্ষা দপ্তর। পরিবহন দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে সেসকল এলাকাগুলিতে দুর্ঘটনা রোধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 
                   মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রোড ট্রাফিক এক্সিডেন্ট (সড়ক দুর্ঘটনা) জিরোতে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমরাও এই বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে অবশ্যই রুলস রেগুলেশন মানতে হবে। সেই সঙ্গে যানবাহন চালকদের যান চালনার সময় আরো সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে যেকোন সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারি। সেই ভাবনা নিয়ে অত্যন্ত সতর্কভাবে যান চালাতে হবে। এতে দুর্ঘটনা থেকে অনেকাংশে রক্ষা পেতে পারি। দুর্ঘটনা রোধ করতে ব্রেথ এনালাইজার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বেপরোয়া ও দ্রুতগামী গাড়ি বা বাইক চালানোর বিরুদ্ধে একমাত্র সচেতনতাই উপায় হতে পারে। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যান চালকরা শুধু নিজেরাই দুর্ঘটনার শিকার হয় না, অন্যদেরকেও দুর্ঘটনার মুখে ঠেলে দেয়। তাই খুবই সচেতনভাবে যানবাহন চালাতে হবে। এছাড়া কোন অবস্থায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি বা বাইক চালানো যাবে না। 
                           অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, সরকার জাতীয় সড়ক প্রশস্ত করার কাজ করছে। সেই সঙ্গে রাজ্যে যানবাহনের সংখ্যাও ক্রমশ বেড়ে চলছে। পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সালে ত্রিপুরায় যানবাহনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ হাজার ৬৭২টি। আর বর্তমানে রাজ্যে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ। যানবাহনের বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেভাবে রাস্তাঘাট বাড়ে নি। সরকার চেষ্টা করছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ সহ রাস্তাঘাটের সংখ্যা বাড়ানোর। অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দূরপাল্লার গাড়ি চালকদের বিশ্রামের কথা মাথায় রেখে সারা দেশে এক হাজারের অধিক বিশ্রামাগার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।এতে গাড়ি চালানোর ফাঁকে বিশ্রাম করতে পারবেন তারা। এর পাশাপাশি দুর্ঘটনা প্রবন এলাকাগুলিতে দ্রুত এম্বুল্যান্স পরিষেবা প্রদানের জন্যও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।         
               অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, গোয়েন্দা শাখার মহানির্দেশক অনুরাগ ধ্যানকর, পরিবহন দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা, পরিবহন কমিশনার উত্তম মন্ডল সহ প্রশাসন ও আরক্ষা দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। এক মাস ব্যাপী সড়ক সুরক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনগনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে পরিবহন ও ট্রাফিক দপ্তর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ