আগরতলা, ১ জুলাই : এই পৃথিবীতে আসার জন্য ডাক্তারদের প্রয়োজন, তেমনি মৃত্যুর পর ডাক্তারের সার্টিফিকেট ছাড়া শ্মশানেও তোলা হয় না তবে কেন ডাক্তারদের উপর আক্রম। ডাক্তারদের উপর গুন্ডামি সরকার বরদাস্ত করবে না। এই অভিমত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহার। প্রতি বছরের মত এবছরও ১ জুলাই শনিবার আগরতলাতেও জাতীয় চিকিৎস দিবস উদযাপন করা হয়। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শত বার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন তথা জাতীয় চিকিৎসক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই কথা গুলি বলেন তিনি।
সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ডাক্তারদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটলে কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। তবে এই ধরনের ঘটনা আগের তুলনায় অনেক কমেছে বলেও জানান। তবে একেবারেই যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য সচেতনতা শিবির করার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান।
সেই সঙ্গে ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, গত বছর এই দিবস পালন থেকে এবছর এই দিবস পালন করা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তারা নিজেরা কে কি করেছে এই বিষয়টা যেন পর্যালোচনা করে দেখেন। ডাক্তাররা সারাদিন পরিশ্রম করেন, এর জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশের প্রয়োজন। তাই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য কর্মীদের এবং সাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য বর্তমান সরকার বাজেটের প্রায় ১০ শতাংশ খরচ করছে চিকিৎসা খাতে। আগামী দিনে আরও বেশি বরাদ্দ করা হবে চিকিৎসার খাতে বলেও জানান। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন চিকিৎসকদের পিজি কোর্স করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কিছু সংখ্যক ডাক্তারদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষটি বিরাজ করছে। সবদিক বিবেচনা করে তা দূর করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাই এই বিষয়টি নিয়ে যারা এখন মন খারাপ করে আছেন তাদের মন খারাপের প্রয়োজন নেই বলেও আশ্বস্ত করেন। বর্তমান সরকার সব সময় মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করছে বলেও এদিন আবার মনে করিয়ে দেন। তিনি নিজে ডাক্তার হওয়ার জন্য অন্যান্য ডাক্তাররাও অনেক বেশি নিশ্চিন্ত হয়ে কাজ করছেন, এমনকি তাদের প্রয়োজনে সরাসরি এসেও যোগাযোগ করছেন বলে জানান। রাজ্যের ডাক্তারদের উপর কাজের চাপ প্রচন্ড বেশি, তাদের উপরের চাপ কমানোর জন্য সরকার চেষ্টা করছে। রাজ্যস্তরের হাসপাতালগুলোতে যে ধরনের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার রয়েছে, এই সব পরিষেবা জেলা হাসপাতাল গুলিতে চালু করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও সারা দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উন্নত করার জন্য নানার চেষ্টা। এর ফল শুধু রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত অনেক উন্নত হয়েছে এবং মানুষ ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন।
গত ২৫ বছরের শাসনে রাজ্যের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আইএস অফিসার কেউ তাদের যোগ্য সম্মান পাননি। সব সময় দেখা হতো কাছের লোক কিনা, যারা নেতা নেত্রীদের কাছের লোক ছিলেন তারাই সুবিধা পেতন। তবে বর্তমানে রাজ্য এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসেছে।
ভগবান আমাদের সৃষ্টি করে থাকলেও ডাক্তাররা আমাদের জীবনকে নিরাপদ রাখেন। কিন্তু অনেকেই এই বিষয়গুলো মাঝে মাঝে ভুলে যান। তাই সবাই যেন ডাক্তারদের উপযুক্ত সম্মান দেওয়ার আহবান রাখেন।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কর্মরত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের নিরিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক এবং রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. দিলীপ কুমার দাস, ডাক্তার অশোক সিনহা সহ স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিক, ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা।
0 মন্তব্যসমূহ