Advertisement

Responsive Advertisement

নাগীছড়ায় জৈব মাশরুম উৎপাদন বিষয়ক কর্মশালার সূচনা করলেন দপ্তরের মন্ত্রী


আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর : মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, তাই আরো বেশি পরিমাণে মাশরুম চাষ করতে হবে। রাজ্যের মাটিতে পেঁয়াজ ফলানোর মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এখানে অনেক কিছু চাষ সম্ভব। এই অভিমত কৃষি ও কৃষক কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথের। শুক্রবার নাগীছড়ায় জৈব পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন করতে এসে এই অভিমত ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। 
ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ প্রতিনিয়ত গ্রহণ করা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি এবং জৈব পদ্ধতির প্রসার ঘটাতে আয়োজিত হলো বিশেষ কর্মশালা। শুক্রবার নাগিছড়ার স্টেট হর্টিকালচার রিসার্চ স্টেশন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় ‘জৈব মাশরুম উৎপাদন, ফসল-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য উদ্যানতত্ত্ব সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম’ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা। কর্মসূচি যৌথভাবে আয়োজন করে স্টেট হর্টিকালচার রিসার্চ স্টেশন, নাগিছড়া এবং মিশন অর্গানিক ভ্যালু চেইন ডেভেলপমেন্ট ফর নর্থ ইস্টার্ন রিজিওনের ত্রিপুরা শাখার যৌথ উদ্যোগে।
সকালে অংশগ্রহণকারীদের রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কর্মশালার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথের উপস্থিতিতে থিম প্যাভিলিয়ন ও কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়। এরপর অতিথিদের সংবর্ধনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল অংশ শুরু হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজ্যিক উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ও ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ। তিনি বলেন, ত্রিপুরার কৃষকদের আয় বৃদ্ধি, বাজার সংযোগ ও নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য এ ধরনের কর্মশালা অত্যন্ত জরুরি। মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন অর্গানিক ভ্যালু চেইন ডেভেলপমেন্ট ফর নর্থ ইস্টার্ন রিজিওনের ত্রিপুরা শাখার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব দেববর্মা। তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জৈব কৃষির গুরুত্ব ও কেন্দ্রের নানা প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।
এরপর কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ তাঁর বক্তব্যে বলেন, রাজ্য সরকার কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে এবং টেকসই কৃষি গড়ে তুলতে জৈব চাষ, মাশরুম উৎপাদন ও ফসল-পরবর্তী ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিচ্ছে। তিনি কৃষকদের উদ্ভাবনী কৃষি-প্রযুক্তি গ্রহণের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন মাশরুমের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই কৃষকদের মাশরুম চাষের দিকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি মন্ত্রী জানান রাজ্যে অনেক ভালো মানের পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। এক সময় মানুষের ধারণা ছিল রাজ্যে পেঁয়াজ চাষ সম্ভব নয় কিন্তু এই ধারণাকে কৃষকরা ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছেন। তাই এদিন কৃষকদের মধ্যে পেঁয়াজের ছাড়াও বিতরণ করা হয় বলে জানান। 
কর্মশালায় বিভিন্ন কৃষক উৎপাদক সংগঠন (এফ পি ও) ও কৃষক উৎপাদক কোম্পানি ( এফ পি সি)-এর প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। তাদের মতামত নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন দপ্তরের আধিকারিকরা।
এরপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাজ্যের উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের ডিরেক্টর দীপক কুমার দাস। উদ্বোধনী পর্বের শুরু হয় প্রযুক্তিগত সেশন, যেখানে বিশেষজ্ঞরা জৈব মাশরুম উৎপাদনের ধাপ, সংরক্ষণ প্রক্রিয়া, বাজারজাতকরণ ও কৃষি-সহযোগী অন্যান্য উদ্যোগ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেন। অংশগ্রহণকারীরা হাতে-কলমে নানা দিক শিখে নেন।
দিনব্যাপী এই কর্মশালার সমাপ্তি ঘটে বিকেলে, প্রশিক্ষণ সামগ্রী বিতরণের মধ্য দিয়ে। উপস্থিত কৃষক, উদ্যোক্তা ও গবেষকরা জানান, এ ধরনের কর্মশালা তাঁদের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ, কারণ এখানে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটেছে।
ত্রিপুরায় কৃষির আধুনিকীকরণ ও টেকসই উন্নয়নের পথে এই কর্মশালা এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন বলে অভিমত অংশগ্রহণকারী কৃষকদের।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ